ধর্মঘটের কবলে বৃটেন, বিড়ম্বনায় মানুষ
ব্রেক্সিট-কোভিড আর ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় টালমাটাল বৃটেনে নতুন করে যোগ হয়েছে ধর্মঘট। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে মানুষ যখন দিশেহারা তখন ধর্মঘট দেশটিতে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে।
প্রথম নিউজ ডেস্ক: ব্রেক্সিট-কোভিড আর ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় টালমাটাল বৃটেনে নতুন করে যোগ হয়েছে ধর্মঘট। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে মানুষ যখন দিশেহারা তখন ধর্মঘট দেশটিতে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে। বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে দেশটির বর্ডার ফোর্স, বাস, নার্স, এম্বুলেন্স, স্কুলের শিক্ষক, ইউনিভার্সিটির স্টাফ, রেলওয়েকর্মীসহ জরুরী সেবা সমূহের কর্মীরা দিনের পর দিন ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন মানুষ। তবে ধর্মঘটকারীরা বলছেন, দরকষাকষিতে ব্যর্থ হওয়ার পর বাধ্য হয়েছেন এ পথ বেছে নিতে। এছাড়া তাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে মানুষের বেঁচে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে।
গত বুধবার ইতিহাসের সবথেকে বড় ধর্মঘটের মুখোমুখি হয় বৃটেন। ২০১১ সালের পর পেশাজীবীদের সবচেয়ে বড় ধর্মঘট এটি। এইদিন দেশটির স্কুল শিক্ষক, ইউনিভার্সিটির স্টাফ, রেলওয়েকর্মী, বাস ডাইভারসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রায় ৫ লাখ কর্মী ধর্মঘট পালন করেন। দেশটির বিভিন্ন সেক্টরে ধর্মঘট চলমান থাকায় জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।
সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনা চালিয়ে গেলেও এখনও সংকটের সমাধান হয়নি। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিপাকে।
তবে সচেতন মহল বলছেন- আলোচনার মাধ্যমে ধর্মঘট থেকে দেশটির বর্ডার ফোর্স, বাস, নার্স, এম্বুলেন্স, স্কুলের শিক্ষক, ইউনিভার্সিটির স্টাফ, রেলওয়েকর্মীসহ জরুরী সেবা সমূহের কর্মীদের না ফেরাতে পারলে পরিস্থিতি আলো জটিল আকার ধারণ করবে।
এদিকে, আজ শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি)আবারও রেলওয়েকর্মীরা ধর্মঘট পালন করছেন। সকাল থেকে দেশটিতে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। যার ফলে ট্রেন-এর উপর নির্ভরশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় হাজার হাজার কর্মীকে ঘরে অলস সময় পার করতে হচ্ছে। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ১৪টি ট্রেড অপারেটিং কোম্পানি চলমান বেতনবিরোধের অংশ হিসাবে এ ধর্মঘট করছে। বেশিরভাগ বড় অপারেটর বলছে, তারা সারা দিন কোনো ট্রেন চালাতে পারবে না।
ধর্মঘটের প্রভাব নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা হয় লন্ডন কে, সি সলিসিটর্স-এর প্রিন্সিপাল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী’র। তিনি বলেন, বর্তমান এই পরিস্থিতি একদিনে সৃষ্টি হয়নি, ব্রেক্সিটের কারণে মানুষের ব্যয় বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। কোভিডের সময় মানুষের সবকিছু ক্ষমতার বাহিরে চলে যায়, এর মধ্যে যোগ হয় ইউক্রেন যুদ্ধ। বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এনার্জি বিল হাই হয়ে গেছে। বিষয়টি সরকারকে মাথায় রেখে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। আইন করে সমাধান সম্ভব নয়। যারা দেশের সেবা করবে তাদের সমস্যা সমাধান না করলে সেবা আশা করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, যারা সেবা দিবে তারা ঘর ভাড়ার চিন্তায় থাকবে, খাবার কিনতে পারবে না, এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে মানুষ চলবে। সরকার বিষয়টি যত তাড়াতাড়ি সমাধান করবে ততোই দেশ এবং সাধারণ মানুষের জন্য মঙ্গলজনক হবে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: