ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কের বেহাল দশা: প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা
এবড়ো-থেবড়ো সড়কে এমন ঝুঁকি আর দুর্ভোগ নিয়েই দিনের পর দিন চলাচল করছে ত্রিশালসহ পাশের আরও দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয়রা সড়কটি সংস্কারের জন্য বার বার দাবি জানালেও তা হচ্ছে না।
প্রথম নিউজ, ময়মনসিংহ: কোথাও পিচ ঢালাই আছে, আবার কোথাও নেই। সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। দিন দিন এসব খানাখন্দ বড় আকার ধারণ করছে। বৃষ্টির পানি-কাদায় একাকার সড়কটি। এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। আহত হচ্ছেন যাত্রীরা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহন। এ চিত্র ময়মনসিংহের ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কের। এবড়ো-থেবড়ো সড়কে এমন ঝুঁকি আর দুর্ভোগ নিয়েই দিনের পর দিন চলাচল করছে ত্রিশালসহ পাশের আরও দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয়রা সড়কটি সংস্কারের জন্য বার বার দাবি জানালেও তা হচ্ছে না। এখন তাদের প্রশ্ন, এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে কবে?
জানা গেছে, সাড়ে ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কটি উপজেলার সবচেয়ে ব্যস্ততম সড়ক। যা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে শুরু হয়ে পৌরশহরের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে। এ সড়কে পণ্য পরিবহন কাজে নিয়োজিত শত শত ভারী যানবাহন চলাচল করে। এ অঞ্চল মৎস্য খামার অধ্যুষিত হওয়ায় যানবাহনগুলোর মধ্যে মাছ পরিবহনে ব্যবহৃত যানবাহনই বেশি। বাজারজাত করতে পানিভর্তি ড্রামে এসব মাছ পরিবহন করতে হয় বলে ঝুাঁকিতে নিয়মিতই সড়কে পড়ছে পানি। এতে বৃষ্টি না থাকলেও বা অল্প বৃষ্টিতেই বড় হচ্ছে খানখন্দ। খানাখন্দে ঝুঁকি নিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
মাঝে-মধ্যে চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে নিতান্তই নিরুপায় হয়ে প্রায়ই নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে এসব খানাখন্দে ইট-বালু ফেলে কোনো রকম উপযোগী করছে স্থানীয়রা। অথচ দীর্ঘ কয়েক বছরের ভোগান্তির পর ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুন মাস পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির মেরামত কাজ করা হয়। মেরামত কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিএম এন্টারপ্রাইজ। সড়কটির কাজ শেষ হওয়ার বছর না ঘুরতেই সড়কে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। সড়কে চলাচলকারী মালবাহী যানবাহন নিয়মিতই আটকে যায় এসব খানাখন্দে। ঘটছে দুর্ঘটনা, হতাহত হচ্ছে সড়কে চলাচলকারী মানুষ। খাদে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় মালবাহী যানবাহন এবং চলাচলকারী মানুষকে।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘ সময়ের ভোগান্তির পর সড়কটি মেরামত করা হলেও নিম্নমানের কাজ হওয়ায় অল্প কিছু দিনের মধ্যেই খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছিল। তখন ইট, বালু ফেলে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করা হলেও এখন আবারও বেশ কয়েকটি জায়গায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দ্রুত মেরামত করা না হলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তারা আরও জানায়, ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কটি ত্রিশাল, ভালুকা, টাঙ্গাইলের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। এ সড়ক দিয়ে তিন উপজেলার মানুষের যাতায়াত। যতই দিন যাচ্ছে এই সড়কটি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
সড়কে যাতায়াতকারী ইকবাল হোসেন বলেন, এবার বৃষ্টির মৌসুমে আমাদের এখানে বৃষ্টি নেই বললেই চলে। তারপরও খানাখন্দে জমে রয়েছে পানি। বরাবরের মতো বৃষ্টি হলে তো এ সড়কে চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যেত। পার্শ্ববর্তী উপজেলার মূল সড়কগুলো ঝকঝকে, চকচকে থাকলেও আমাদের মূল সড়কগুলোর বেহাল দশা। মানুষের কষ্ট যত দ্রুত লাঘব হবে তাতেই মঙ্গল।
তবে এ ব্যাপারে আশার বাণী শোনালের ত্রিশালের উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, সড়কটি মেরামতের প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়েছি। শিগগিরই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আশা করছি এ বছরই কাজ শুরু করা যাবে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews