তফশিলের বৈধতা নিয়ে রিটের আদেশ আজ

তফশিলের বৈধতা নিয়ে রিটের আদেশ আজ

প্রথম নিউজ ঢাকা:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফশিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের বিষয়ে আদেশের জন্য হাইকোর্টে দিন ধার্য রয়েছে আজ সোমবার। এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে আদেশের এ দিন ধার্য রয়েছে।

এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফশিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে আদেশের জন্য রোববার দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।

আদালত বলেন, ওই দিন চাইলে রাষ্ট্রপক্ষ আরও শুনানি করতে পারবেন। আর তফশিল পেছানো সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো বক্তব্য বা যুক্তি থাকলে রিটকারী আইনজীবীকে সেটি লিখিতভাবে জমা দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত সোমবার (৪ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। তবে ধার্য দিনে আদেশ না দিয়ে আজকের দিন নির্ধারণ করেন আদালত। আদালতে এদিন শুনানিতে ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম। 

অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ আর রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. ইউনুস আলী আকন্দ।

এ সংক্রান্ত রিটের ওপর ৩ ডিসেম্বর প্রথম দিনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দিন রেখেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার দ্বিতীয় দিনের শুনানি হয়।

এদিন শুনানিতে রিটকারীপক্ষের আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা তুলে ধরে বলেন, নির্বাচনকালীন মন্ত্রিপরিষদ ছোট না করে ভোটের আয়োজন করা ঠিক হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রীবর্গ ও সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ না করে নির্বাচন করছেন। এজন্য জাতীয় নির্বাচনের তফশিল স্থগিত বা পেছানোর নির্দেশনা চান এ আইনজীবী।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রিট শুনানির নামে সময় নষ্ট করার জন্য রিটকারী আইনজীবীকে জারিমানার আর্জি জানানো হয়। নির্বাচন কমিশনের আইনজীবীও রিটের বিরোধিতা করে রিট খারিজের আর্জি জানান। এর পর আদেশের জন্য ১০ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেন আদালত।

ভোটগ্রহণের ৫২ দিন আগে গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফশিল অনুযায়ী, ভোট হবে আগামী ৭ জানুয়ারি।

একাদশ জাতীয় সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের ভোটগ্রহণের দিন ঠিক করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এই তফশিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন পেছানোর সুযোগ রয়েছে।

আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব, সংসদসচিব এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

গত ২৮ নভেম্বর ইউনুছ আলী আকন্দ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠান। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন পেছানোর সুযোগ রয়েছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে হাইকোর্টে রিট আবেদনের কথা বলা হয়েছিল। সে ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টে এ রিট করেন ইউনুছ আলী আকন্দ।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর।

গত ২৮ নভেম্বর বিকেলে ই-মেইলে ও রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইউনুছ আলী আকন্দ সংসদ নির্বাচন পেছানোর দাবিতে প্রধান নির্বাচন কশিনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। লিগ্যাল নোটিশে এই আইনজীবী উল্লেখ করেন, বর্তমানে রাজনৈতিক সংকট চলছে। দেশে হরতাল-অবরোধ চলছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু ভোট করা সম্ভব নয়। এতে বলা হয়, হরতাল-অবরোধের ফলে দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত নন। এ অবস্থায় নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে পুনরায় তফশিল ঘোষণা করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবি জানানো হয়।