ডলার কারসাজি-হুন্ডি প্রতিরোধে মানি এক্সচেঞ্জে অভিযান, গ্রেপ্তার ৫
অভিযানে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: ডলার কারসাজি ও হুন্ডি প্রতিরোধে রাজধানীর উত্তরা এলাকার বেশকয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জে অভিযান পরিচালনা করেছে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)। অভিযানে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন— নোভা মানি এক্সচেঞ্জের এমডি সাইফুল হাসান ভূঁইয়া, একই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মো. নাইমূল ইসলাম সুজন, কর্মচারী মো. আব্দুল আউয়াল, আল মদিনা ফটোস্ট্যাটের মালিক রেজাউল করিম সোহেল ও মার্ক মানি এক্সচেঞ্জের মালিকপক্ষের প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম মানিক। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তরা এলাকার কুশল ভবনের বেশ কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জে এ অভিযান পরিচালনা করে এনএসআই।
অভিযান সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে একাধিক কাউন্টার খুলে গোপনে নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি দামে ডলার বিক্রি, রেজিস্ট্রারে অসঙ্গতিপূর্ণ লেনদেন প্রদর্শন, হিসাব বহির্ভূত ফরেন কারেন্সি মজুতসহ নানাবিধ অনিয়মে জড়িত বেশ কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম পাওয়া যায় নোভা এবং মার্ক মানি এক্সচেঞ্জ।
অভিযানে নোভা মানি এক্সচেঞ্জের বিভিন্ন কাউন্টার থেকে ৭ হাজার ২৪৭ ইউএস ডলার, ৮৮ হাজার ৯৪০ ভারতীয় রুপি, ৬৫ হাজার ৯৬৫ নেপালি রুপি, ৮ হাজার ১১৪ সৌদি রিয়াল, ১১ হাজার রিঙ্গিত, ৩৭ হাজার ৭০০ রুবল, ৯ হাজার ৮২৫ ইউরো ও ১ হাজার ৫৯০ পাউন্ড-সহ ৩৯টি দেশের ফরেন কারেন্সি জব্দ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম লঙ্ঘন করে ফরেন কারেন্সি সীমার বাইরে অতিরিক্ত মজুত ও অতিরিক্ত মূল্যে ব্যবসা করে আসছিল।
অন্যদিকে মার্ক মানি এক্সচেঞ্জ থেকে অবৈধ ৭৬ হাজার ৬৫০ ভারতীয় রুপি, ১৯ হাজার ৯৪০ সৌদি রিয়াল, ১০ হাজার ৭০০ চায়না ইউয়ান, ১ হাজার ১০০ ইউরো, ৪ হাজার ৩৩৫ দিরহাম ও ৪ হাজার ৪৪২ রিঙ্গিতসহ ১৫টি দেশের ফরেন কারেন্সি জব্দ করা হয়। এছাড়া মার্ক মানি এক্সচেঞ্জে ৯ লাখ, ৪৬ হাজার টাকা মালিক বিহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। মার্ক মানি এক্সচেঞ্জ মূলত মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসার আড়ালে অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশের বিদেশি মুদ্রা গোপনে মজুদ করে আসছিল বলেও অভিযানে সংশ্লিষ্টরা জানতে পারে।
এদিকে উত্তরার প্যারাডাইস, রিল্যায়াবল, ঢাকা, প্যারামাউন্ট, এইচ এস, রামাদা, রুবি মানি এক্সচেঞ্জসমূহেও পরিদর্শন ও অভিযান পরিচালনা করা হয়। সঠিক নিয়ম মেনে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। অভিযানে গ্রেপ্তারদের পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডির) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে।