টুকু-পলক ১০ দিনের রিমান্ডে
গতকাল তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: রাজধানীর পল্টনে এক রিকশাচালককে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে দুই পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল আলম তাদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে কঠোর নিরাপত্তায় শামসুল হক টুকু, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং তানভীর হাসান সৈকতকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। বেলা ৪টার দিকে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা ‘পলকের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘ফাঁসি চাই’সহ নানা ধরনের স্লোগান দেন। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের সঙ্গে সেনাবাহিনী ও আনসারকেও দেখা যায়। আদালতে তোলার আগে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহসিন মিয়া সকল আইনজীবীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। এ সময় তিনি ঢাকা বারের বিতর্কিত কাউকে এজলাসে না থাকার কথা বলেন। শুনানি শুরু হলে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাদের জামিন প্রার্থনা করলে তা নামঞ্জুর করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এর আগে বুধবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় এ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়।
গত ১৯শে জুলাই কোটা বিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর পল্টনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রিকশাচালক কামাল মিয়া (৩৯)। এ ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের আসামি করে ২০শে জুলাই একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (৩৬)। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আমার স্বামী কামাল মিয়া (৩৯) পেশায় একজন রিকশাচালক। গত ১৯শে জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রতিবেশীর মাধ্যমে জানতে পারি, আমার স্বামী রক্তাক্ত অবস্থায় পল্টন মডেল থানার বটতলা গলির মুখে পড়ে আছে। তখন আমি ও আমার মেয়ে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার স্বামীকে মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে বলা হয়, ঘটনাস্থলের স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, ওই স্থানে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা রাস্তা অবরোধ করে আগুন দেয় এবং বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকে। তখন কাকরাইল থেকে পল্টন থানায় আসার পথে একজন পুলিশকে দুষ্কৃতকারীরা আটক করে মারধর করে। তার কাছে থাকা সরকারি পিস্তল ও গুলি, ওয়ারলেস সেট, মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ নিয়ে যায় এবং তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলে। তখন পল্টন থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দুষ্কৃতকারীদের ধাওয়া করে। এ সময় দুষ্কৃতকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পুলিশ ও দুষ্কৃতকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মাঝে পড়ে যান রিকশাচালক কামাল মিয়া।