জুলাইয়ে ৭ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য ঘাটতি

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যের (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।

জুলাইয়ে ৭ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য ঘাটতি

প্রথম নিউজ, অনলাইন: রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি ব্যয় বেশি হওয়ায় অর্থবছরের শুরুর মাসেই বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। সামগ্রিক লেনেদেনের সঙ্গে আর্থিক হিসাবে বড় ঘাটতি দেখা গেছে। ফলে জুলাইয়ে ৬৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে। দেশীয় মুদ্রায় প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে যার পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যের (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৬.৩৫ বি‌লিয়ন বা ৬৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছর শেষ হয় ১৭১৫ কোটি ৫০ লাখ (১৭.১৫ বি‌লিয়ন) ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসটিও শুরু হলো বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে। আলোচিত জুলাই মাসে মোট পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে ৪৩৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের। একই সময়ে দেশ আমদানি করেছে ৪৯৯ কোটি ডলারের পণ্য। এতে মাসটিতে বাণিজ্য ঘাটতি দেখা গেছে ৬৩ কোটি ৫০ লাখ (৬ দশ‌মিক ৩৫ বি‌লিয়ন) ডলারের। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি এক ডলার ১১০ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ৬ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা।

রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ায় বাণিজ্যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তাছাড়া বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্য ঊর্ধ্বমুখী যার প্রভাব পড়েছে অন্যান্য পণ্যেও। এছাড়া আশানুরূপ রেমিট্যান্স আসছে না, আবার বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে এসব কারণে এ ঘাটতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আলোচিত জুলাই মাসে বৈদেশিক বাণিজ্যের আর্থিক হিসাবে ৮৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঘাটতি হয়েছে। যা গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ের (জুলাই) তুলনায় ১৩ গুণের চেয়ে বেশি। গত জুলাই মাসে এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আবার সামগ্রিক লেনেদেনেও (ওভারঅল ব্যালান্স) বড় ঘাটতি দেখা গেছে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সামগ্রিক লেনেদেনের (ঋণাত্মক) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আগের বছরের জুলাইয়ে এই সূচকটির ঘাটতি ছিল ১০৮ কোটি ১০ লাখ ডলার।

তবে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কিছুটা বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ৫০ কোটি ৫০ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বাংলাদেশ যেখানে ৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারের এফডিআই পেয়েছিল।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ২.২৪ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। এতে কমেছে রিজার্ভ। গত ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ২১.৫০ বিলিয়ন ডলারে। একইসাথে কমছে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণও। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এটি আগের বছর এসেছিল ২০৯ কোটি ডলার।