Ad0111

‘ ফরিদপুরে পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ দিলে কাজ হয় বিদ্যুৎ গতিতে’

বাড়তি টাকা ছাড়া মিলে না পাসপোর্ট।

‘ ফরিদপুরে পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ দিলে কাজ হয় বিদ্যুৎ গতিতে’
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ,ফরিদপুর: ফরিদপুরের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অসাধু কর্মচারী ও দালালদের কারণে সেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সেবা গ্রহীতাদের অভিযোগ, ঘুষ দিলে কাজ হয় বিদ্যুৎ গতিতে। আর না দিলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় তাদের। তবে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের দাবি, অফিসে সেবা গ্রহীতাদের কোনও ভোগান্তির শিকার হতে হয় না। দালালের দৌরাত্ম্যও নেই। অন্যদিকে পুলিশ বলছে দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে ধরাও হয়েছে।  

সরেজমিন গিয়ে সেবা গ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দালাল ও অসাধু কর্মচারীদের দৌরাত্ম্যে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পাসপোর্ট করতে আসা সাধারণ মানুষ। বাড়তি টাকা ছাড়া মিলে না পাসপোর্ট। দালাল চক্রের অর্থ বাণিজ্য ও অন্যদিকে পাসপোর্ট অফিসের কিছু কর্মকর্তা, কর্মচারীর অনিয়মের কারণে জিম্মি হয়ে পড়েছেন পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা। 

পাসপোর্ট করতে আসা একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ, দালালদের মাধ্যমে ফরম জমা দিলে সেই ফরম সহজে জমা হয়। তাদের আশ্রয় না নিলে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা হয়রানি করেন। তারা পাসপোর্ট ফরমে সংকেত ব্যবহার করেন। এছাড়া সেখানে কর্মরত কিছু আনসার সদস্যও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের মাধ্যমেই পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা বাড়তি টাকার ভাগ পান।

ভোগান্তির শিকার আরিফ হোসেন বলেন, আমি ব্যাংক ড্রাফটের জন্য পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকা দিছি। পরে তারা আমার থেকে আরও ১৫শ’ টাকা নিয়েছেন। ঘুষ না দিলে ফরম পূরণে সব তথ্য ভুলে ভরে যায়, আর ঘুষ দিলে ভুল সহজেই নির্ভুল হয়। ঘুষ দিলে বিদ্যুৎ গতিতে কাজ হয়, না দিলে পোহাতে হয় ভোগান্তি। এ প্রসঙ্গে আসমা নামে আরেকজন বলেন, কোনও দালালের মাধ্যমে না গেলে ফরমে ভুল না থাকলেও হাজারো ভুল ধরা হয়। আর ভুল থাকলে তো কোনও কথাই নেই।

তবে এসব অনিয়ম অস্বীকার করে পাসপোর্ট অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, দালালদের কারও সঙ্গে তাদের অফিসের কেউ জড়িত নন। এদিকে পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্যের কথা স্বীকার করে পুলিশ জানায়, পাসপোর্ট অফিসের দালালদের চিহ্নিত করা হয়েছে। গত শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সেবা গ্রহীতাকে হয়রানির সময় হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচ দালালকে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, পাসপোর্ট অফিসের দালাল চক্রকে ধরতে গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে পাঁচ দালালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। 
তবে অভিযোগ ‍অস্বীকার করে ফরিদপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক শামীম আহম্মেদ বলেন, দালালদের অফিসে ঢোকার কোনও সুযোগ নেই। পাসপোর্ট অফিসের নিয়ম হলো আবেদনকারী নিজে ফরম পূরণ করবে, জমা দিবে এবং নিজে পাসপোর্ট নিবে।

অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মনগড়া এবং অসত্য দাবি করে তিনি আরও বলেন, আমার এ অফিসে এমআরপি পাসপোর্ট হয় না। এছাড়া, প্রতিদিন এক থেকে দেড়শ’ ফাইল জমা পড়ে। তবে, কেউ কোনও হয়রানির শিকার হন না। দালালদের সঙ্গে আমার কোনও পরিচয় নেই। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) জামাল পাশা বলেন, পাসপোর্ট করতে আসা কেউ হয়রানির শিকার হলে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news