জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচনকালীন সরকার চায় জনতা পার্টি
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পূর্ণ জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ১০ জন ও অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের পাঁচজন ও সুশীল সমাজের পাঁচজন নিয়ে একটি নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জনতা পার্টি (বিজেপি)। আজ শনিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মিঠুন চৌধুরী এ দাবি জানান।
মানবতাবাদ, সুশাসন, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশের বর্তমান রাজনীতি ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন ফর্মুলা বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেরনে মিঠুন চৌধুরী বলেন, বিশ্বের সব দেশ ও জাতির কাছে জাতিসংঘ মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পূর্ণ জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ১০ জন ও অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের পাঁচজন ও সুশীল সমাজের পাঁচজন নিয়ে একটি নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। সেই সরকারের মেয়াদ থাকবে তিন মাস। এই তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবে। বর্তমান সরকার অবশ্যই তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পার্লামেন্ট ভেঙে দেবে। আর পুরো বিষয়টি সম্পূর্ণ বিশ্বস্ততার সঙ্গে তদারকি করবে জাতিসংঘ।
তিনি বলেন, আমরা রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে চাই। বড় দলগুলো সাধারণ জনগণকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলায় ব্যস্ত। সবাইকে মিথ্যা বলা হচ্ছে, উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে দেশ। অথচ নিম্নমানের চালের কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এক কেজি পোলট্রি মুরগি ১৮০ টাকা। দুর্নীতি করে সমস্ত টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় অসহায় সাধারণ মানুষ। অথচ মুখে আমরা বলি সাধারণ মানুষ খুব সুখে আছে।
বিজেপি সভাপতি বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থাটা নতুন করে বলার কিছু নেই। আমেরিকা আমাদের প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তাতেই সরকারের ভাবমূর্তি বোঝা যাচ্ছে।
জাতীয় নির্বাচনে জনগণের উৎকণ্ঠা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগে সাধারণ মানুষ চরম দুশ্চিন্তায় থাকেন, কখন জানি আমাদের কী হয়। কারণ বাংলাদেশের বড় দলগুলোর কাছে জনগণ একেবারে জিম্মি। তারা কেউ কাউকে ছাড় দেয় না, কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে চায় না। এ থেকে সাধারণ জনগণের মুক্তির উপায় কী?
জাতিসংঘ মহাসচিবকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে বেশকিছু পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ জনতা পার্টি (বিজেপি) আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থীতা দেবে এবং এককভাবে নির্বাচন করবে। দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটি প্রতিষ্ঠা করা হবে। রাজনীতিতে কালো শব্দটা পরিহার করা হবে। সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক সুরক্ষা আইন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়, সংখ্যালঘু কমিশন ও বিশেষ ট্রাইবন্যাল গঠন করে নির্যাতিত পরিগুলোকে সব আইনি সহযোগিতা প্রদান করা হবে। সেই সঙ্গে অতীতের সব নির্যাতন ও নিপীড়নের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।
‘শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক প্রশাসন নয়, প্রশাসনকে বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। প্রত্যেক বিভাগকে প্রাদেশিক সরকারে রূপান্তরিত করা হবে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে সার্টিফিকেট সর্বস্ব না করে কারিগরি শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সে লক্ষ্যে প্রত্যেক উপজেলা ও জেলায় টেকনিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা হবে। পার্লামেন্টে উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হবে। ধর্মের ভিত্তিতে নয়, নারীদের অধিকার সমানভাবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। বাংলাদেশে সব কালো আইন (বিতর্কিত ডিজিটাল আইন) বাতিল করা হবে।ঘরে ঘরে একজন করে সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজেপির ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রাজেন্দ্রনাথ রায়, যুগ্ম মহাসচিব সাইফুল ইসলাম, মাসুদ কামাল কেন্দ্রীয় সদস্য কনিকা মন্ডল, দেব দোলাল শাহা, আরিফুর রহমান, ফজলুল হক বাবু প্রমুখ।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: