‘ছাত্রলীগের কোনো শর্তে আছে মৃতের জন্য দোয়া করলে বহিষ্কার করা হবে’
আমাদের বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে, যদি তোমার শত্রুরও মৃত্যুর খবর পাও তবে তার জন্য দোয়া করো। রাজনীতিতে এসে যদি ইসলামের পক্ষে কথা বলতে না পারি তাহলে এই রাজনীতি দিয়ে কী করব। তবে যতদিন আছি দেশের মানুষের জন্য নিজ থেকে যতটুকু পারি কাজ করে যাব ইনশাআল্লাহ। সব কিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ।
প্রথম নিউজ, গোপালগঞ্জ: আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর শোক জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার দুটি শাখার ছয় ছাত্রলীগের নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে তাদের স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য জেলা ছাত্রলীগ বরাবর সুপারিশ করা হয়েছে। এদিকে বহিষ্কৃত এক নেতা এই বহিষ্কার আদেশের প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে আরও একটি পোস্ট করেন।
বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, কাশিয়ানী উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ও ইমন সরদার, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক সোহাগ শরিফ এবং নিজামকান্দি ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সোহাগ মোল্যা।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) রাতে তাদের বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিয়ানী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজাদ হোসেন মৃধা। এর আগে বিকেলে কাশিয়ানী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আজাদ হোসেন মৃধা ও সাধারণ সম্পাদক মাসুম শেখ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয় ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কাশিয়ানী উপজেলা শাখার এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে সংগঠন নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় উপরোক্তদের সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। সেই সঙ্গে তাদেরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গোপালগঞ্জ জেলা শাখা বরাবর সুপারিশ করা হলো।
এদিকে সাঈদীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বহিষ্কার হবার পর ফেসবুক আরেকটি পোস্ট করে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানিয়েছে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ শরীফ। তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আমাকে কাশিয়ানী থানা ছাত্রলীগের আমার উক্ত পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একজন মুসলিম হয়ে আরেক মুসলিম মারা গেলে তার মৃত্যুর খবর শুনে ইনশাআল্লাহ পড়া এবং তার জন্য দোয়া করা কি অপরাধ? এবং ছাত্রলীগের বহিষ্কারের কোনো শর্তে লেখা আছে যে মৃত ব্যক্তির পরকালের জন্য দোয়া করলে সংগঠনের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকা হবে এবং তাকে বহিষ্কার করা হবে? মৃত ব্যক্তি নিয়ে রাজনীতি করা কতটা যৌক্তিক? একটা কথা মনে রাখবেন ধর্মের থেকে রাজনীতি বড় নয়। আজ আমি আপনি রাজনীতির কারণে ছাত্রলীগ আছি কাল যুবলীগ এরপর আওয়ামী লীগ এভাবে দলের পরিবর্তন হবে কিন্তু ধর্ম তো একটাই আমার ইসলাম, ইসলাম ধর্মে জন্ম নিয়েছি আর ইনশাআল্লাহ ইসলাম ধর্মে থেকেই মারা যাব। আমাদের বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে, যদি তোমার শত্রুরও মৃত্যুর খবর পাও তবে তার জন্য দোয়া করো। রাজনীতিতে এসে যদি ইসলামের পক্ষে কথা বলতে না পারি তাহলে এই রাজনীতি দিয়ে কী করব। তবে যতদিন আছি দেশের মানুষের জন্য নিজ থেকে যতটুকু পারি কাজ করে যাব ইনশাআল্লাহ। সব কিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ।
কাশিয়ানী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আজাদ হোসেন মৃধা বলেন, জামায়েত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন দুটি ইউনিটের ৬ জন নেতা। এতে তারা আদর্শ পরিপন্থী ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে। যে কারণে ওই ৬ ছাত্রলীগ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্যও সুপারিশ করা হয়েছে।
কাশিয়ানি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুম শেখ বলেন, দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক জানানো ছাড়াও ওই ছয় নেতার বিরুদ্ধে নানা সময়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। সবকিছু বিবেচনা করেই তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।