চীনের বিনিয়োগ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে

চীনের বিনিয়োগ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে

প্রথম নিউজ, অনলাইন: চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে বেশি লাভ করতে পারে। পাশাপাশি তাদের জন্য এখানে ঝুঁকিও অনেক কম। এর ফলে চীনের বিনিয়োগে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শনিবার রাজধানীর পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিসিসিআই) আয়োজনে এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন (ইআরডি) বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম জাহাঙ্গীর বলেন, চীন ও বাংলাদেশের এই সহযোগিতার সম্পর্ক অনেক দিন আগের। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা চাইনিজ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ের বেশ কিছু নতুন চুক্তি হয়েছিল। দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে গত কয়েক বছরে বেশ কিছু কাজ করা হয়েছে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং টানেল নির্মাণে চীনের বহু কোম্পানি জড়িত। একইভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণেও তারা জড়িত ছিল। তারা সবক্ষেত্রেই বাংলাদেশের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। বিডার নির্বাহী সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, আমরা চাই না বিনিয়োগকারীরা কোনো ধরনের সমস্যায় পড়ুক। এটা যেকোনো দেশ বা দেশীয় উদ্যোক্তারা হতে পারেন। সবার জন্য আমাদের সহযোগিতা থাকবে। যেকোনো বিনিয়োগকারীর সমস্যাই আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখি। চীনা এক বিনিয়োগকারী অভিযোগ করে বলেন, ভিসা ও ওয়ার্কপারমিট পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ বিষয়ে বিডার নির্বাহী সদস্য বলেন, এখন সব কিছু অনলাইনের মাধ্যমে আপনি করতে পারবেন। কোনো তৃতীয় পক্ষের কাছে আপনার ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিটের কাজ করাবেন না। 
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পাবলিক পার্টনারশিপ অথরিটির স্পেশালিষ্ট এ.এম আল-আমিন বলেন, চায়নার বিভিন্ন ব্যাংক দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে অবদান রাখছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের বেশ কিছু হাইওয়ে ও ব্রিজ তৈরিতেও তাদের অবদান রয়েছে। বিকেএমইএ’র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বাংলাদেশের অনেক অবকাঠামো খাতে চায়নার প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। ইনভেস্টমেন্ট, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং টেকনোলজি সাপোর্ট দিচ্ছে। আরএমজি খাতে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি।

বিসিসিসিআই সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা বলেন, করোনাকালে প্রায় তিন বছর চীনের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে, বিনিয়োগ ব্যাহত হয়। চলতি বছর থেকে আবারও চীনের বিনিয়োগ বাড়তে শুরু করেছে। আমাদের রিজার্ভ সংকটকালে চীনের বিনিয়োগ ভালো সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। দেশের মধ্যে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় একটি স্পেশাল চীনা ইকোনমিক জোন হচ্ছে। চীনের বড় বড় প্রকল্পে বিনিয়োগের ফলে আমরা টেকনোলজির বিষয়েও অভিজ্ঞতা লাভ করছি। দেশের বিভিন্ন খাতে চায়নার কোম্পানির অবদান রয়েছে। চায়না বাংলাদেশের বিশ্বস্ত সঙ্গী। ভবিষ্যতেও একসঙ্গে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।

এসআলম গ্রুপের এডভাইসর এএসএম আলমগীর কবির বলেন, দেশের পাওয়ার খাতের উন্নয়নে সবক্ষেত্রেই চীনা কোম্পানিগুলো অবদান রেখেছে। 
পাওয়ারভিশন গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুজিবুর রহমান বলেন, গত ১০ বছরে দেশের রোড, ব্রিজ ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক অবদান রেখেছে চীনরা। এখন আমরা যে স্থানে এসেছি তাতে আমরা গর্বিত। সব ধরনের বড় প্রোজেক্টে চীনা মেশিনারিজ ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের মধ্যে এখনো বাংলাদেশে সবচেয়ে কম দামে শ্রমিক পাওয়া যায়।

এর আগে শুক্রবার ৮ই সেপ্টেম্বর তিন দিনব্যাপী ‘দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ এক্সিবিশন-২০২৩’ এর উদ্বোধন করা হয়। শনিবার ছিল প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিন। প্রদর্শনী চলাকালে বিসিসিসিআই ও চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ এসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) যৌথভাবে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাধিক সেমিনার, দুই দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরির মেলা ও ব্যবসায়ী সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রদর্শনীতে ৬০টির বেশি স্টলে বিভিন্ন চীনা ও দেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।