চীন বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম সহযাত্রী: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি), দীপ্ত টিভি ও কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত 'টিভি পর্দায় চীন উৎসব'-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, এক সময়ের অজানা, রহস্যঘেরা চীন এখন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযাত্রী হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর বহু দেশ ঘুরেছি। কিছুদিন আগে সরকারি সফরে চীন ভ্রমণ করেছি। কিন্তু চীনের সৌন্দর্য দেখে সত্যিকার অর্থেই মুগ্ধ ও অভিভূত হয়েছি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি দেশটির আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা, মানুষের ব্যবহার ও সময়ানুবর্তিতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি), দীপ্ত টিভি ও কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত 'টিভি পর্দায় চীন উৎসব'-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের আয়োজন দু দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ে আরও আগ্রহ সৃষ্টি করবে। দীপ্ত টিভির ডাবিংয়ের মান অনেক উন্নত, যা জনপ্রিয় তুর্কি টিভি সিরিজ সুলতান সোলেমানের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে এবং চীনা টিভি সিরিজ রহস্যময়ীর বাংলা ডাবিংয়ের মাধ্যমে তারা আরেকবার ডাবিং দক্ষতার প্রমাণ দেখিয়েছে।
চায়না মিডিয়া গ্রুপের বাংলা বিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ইয়ান হুয়ালোং। তিনি চীনা ভাষা শিখতে, পড়তে কিংবা কাজ করতে চীন যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের যুবকদের উৎসাহ দিয়ে বলেন, সংস্কৃতি ও শিক্ষা দুটি দেশের জনগণের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক দুটি দেশকে আরও ঘনিষ্ঠ করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, গত মাসের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন চলাকালে এক বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করতে অবকাঠামো, কৃষি ও শিল্প খাতের পাশাপাশি সংস্কৃতি ও শিক্ষা খাতেও সহযোগিতা বাড়াতে একমত হয়েছেন। সে লক্ষ্যে দুই দেশ কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমে চীনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সিরিজের প্রচার নিয়ে আয়েজিত হয় টিভি পর্দায় চীন উৎসব। বাংলাদেশি গণমাধ্যমগুলোতে প্রচারিত সিএমজি প্রযোজিত ও নির্মিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এ অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয় চীনের বর্ণিল সংস্কৃতির নানা উপাদান, কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম এবং এক অঞ্চল এক পথ উদ্যোগের বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচিতি। পাশাপাশি এতে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী চীনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ওপরও আলোকপাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয় দীপ্ত টিভিতে প্রচারিত চীনের ধারাবাহিক নাটক রহস্যময়ীর পরিচিতি, পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় নাটকের ডাবিং শিল্পীদের কয়েকজনকে, যারা তাদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেন দর্শক-শ্রোতাদের সঙ্গে। বাংলায় ডাবিংকৃত এ নাটকটি বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে বলে জানান আয়োজকরা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. ইয়াং হুই, দীপ্ত টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফুয়াদ চৌধুরী, চায়না রেলওয়ে বাংলাদেশ প্রকল্পের প্রধান শি ইউয়ান, চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানির বাংলাদেশ প্রকল্পের প্রধান ফাং মিং এবং নিউ হোপ গ্রুপের বাংলাদেশ প্রকল্পের প্রধান হা ছুয়ান শুই।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সিএমজির বাংলা বিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দি। সবশেষে অতিথিদের নিয়ে আপন এন্টারটেইমমেন্ট নামের ইউটিউব চ্যানেলের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করে কেট কাটা হয়। চীনা নাটক, চলচ্চিত্র ও কার্টুন চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র পাওয়া যাবে এই চ্যানেলে।