গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে কথা বলায় উপাচার্যের সামনেই শিক্ষককে মারধর

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে ৬৫তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভা চলার সময় এ ঘটনা ঘটে।

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে কথা বলায় উপাচার্যের সামনেই শিক্ষককে মারধর
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে কথা বলায় উপাচার্যের সামনেই শিক্ষককে মারধর

প্রথম নিউজ ডেস্ক : সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির পক্ষে কথা বলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সামনেই মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে ৬৫তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভা চলার সময় এ ঘটনা ঘটে। একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় উপস্থিত একাধিক শিক্ষক জানান, একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় গুচ্ছে থাকা, না-থাকা উভয় মতের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। গুচ্ছে না থাকতে চাওয়া শিক্ষকরা এ প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিসহ ইউনিট কমিটি গঠন করতে উপাচার্যকে চাপ প্রয়োগ করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের গুচ্ছে না থাকার কারণ জানতে চান।

তিনি বলেন, ‘গুচ্ছে আসার সময় আমরা সর্বসম্মতিক্রমে একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত, ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে গুচ্ছে এসেছি। এখন গুচ্ছ থেকে বের হতে হলেও সেসব প্রসিডিউরে যেতে হবে।’তবে তাকে কথা শেষ করার আগেই থামিয়ে দেন গুচ্ছে থাকতে না চাওয়া শিক্ষকরা। তাদের এমন ব্যবহারে আব্দুল কাদের টেবিল চাপড়ে বলেন, ‘আমাকে কথা বলতে না দিলে সভা হতে পারে না।’ এরপরই সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাসুদসহ অন্য শিক্ষকরা তার গায়ে হাত তোলেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, একাডেমিক কাউন্সিল সভায় আমি ভিন্নমত দিয়েছি, ন্যায্য কথা বলেছি বলেই এত শিক্ষকের মাঝে আমার গায়ে হাত তুলেছে। এ বিষয়ে আমি আইনি প্রক্রিয়ায় যাব। জবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরে আলম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমি বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে রাজি না। শুধু এটুকু বলব, ভালো কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ কে এম লুৎফর রহমান বলেন, ‘এখানে মারামারির ঘটনা ঘটেনি। সে খুব উত্তেজিত ছিল। বসতে বলার পরও বসতে চাচ্ছিল না। কয়েকজন তার ঘাড়ে চাপ দিয়ে বসিয়ে দিয়েছে। আর বিষয়টা মিটমাট হয়ে গেছে। আমরাও দুঃখ প্রকাশ করেছি, সে-ও স্যরি বলেছে।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, ‘একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে আমাদের সামনে এমন একটা ঘটনা ঘটবে তা কাম্য ছিল না। শিক্ষকদের এমন ঘটনা দেখার জন্য প্রস্তত ছিলাম না। এর জন্য আমি লজ্জিত, দুঃখিত, মর্মাহত।’

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের সর্বসম্মতিক্রমে ও সরকারের সিদ্ধান্তে গুচ্ছে এসেছে। শিক্ষামন্ত্রী যেহেতু বলেছেন আগামী বছর থেকে বুয়েট, ঢাবিসহ সবার একসঙ্গে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা হবে। আমরা একটা সেশন অপেক্ষা করতে পারতাম। পরেরবার ঢাবি, বুয়েট না এলে আমরা সহজেই সরে আসতে পারতাম। এ নিয়ে এত কাহিনি, মারামারি দরকার হতো না।’