কুড়িগ্রামে হাসপাতালে বাড়ছে রোগী

শৈত্যপ্রবাহের কারণে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। হিমেল কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়ায় কাবু হয়ে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার কয়েক লাখ মানুষ।

কুড়িগ্রামে হাসপাতালে বাড়ছে রোগী
কুড়িগ্রামে হাসপাতালে বাড়ছে রোগী

প্রথম নিউজ, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে শৈত্যপ্রবাহের কারণে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। হিমেল কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়ায় কাবু হয়ে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার কয়েক লাখ মানুষ। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। বিকাল থেকে পরদিন সকাল ৯টা পর্যন্ত দেখা যায় না সূর্যের মুখ। ভোরে ও সন্ধ্যায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতো পড়ছে কুয়াশা। ঘন কুয়াশার কারণে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচলও। রাস্তাঘাটে লোক চলাচলও কমে গেছে। ভিড় বাড়ছে শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে। এদিকে টানা শীতের কারণে হাসপাতাল ও ফার্মেসিগুলোতে বেড়েছে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াজনিত রোগীদের সংখ্যা। কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (চ. দা.) তুহিন মিয়া জানান, দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। 

শনিবার সকালে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে কর্মজীবীরা। কুড়িগ্রাম শহরের কাশিয়াবাড়ী এলাকার রিকশাচালক চটকু মিয়া (৪৩) জানান, ‘ভোরোত স্কুলের ছওয়াগুলাক উবাইতে উবাতে বুকোত সর্দি জমছে। কামাই করং না, কবরাজোক ট্যাকা দেং! হামারগুলার কাহিল অবস্থা বাহে।’   কুড়িগ্রাম সিএন্ডবি এলাকার নয়ন (২৫) জানান, শীতে কমবেশি সবাই সহায়তা হিসেবে কম্বল পান। সেগুলো এমন পাতলা যে, কোনো কাজে আসে না। ২/৩টা গায়ে দিলেও ঠাণ্ডা অনুভূত হয়। আমরা লেপসহ কম্বল গায়ে দিয়েও ঠাণ্ডা তাড়াতে পারছি না। কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর-এ-মুর্শেদ জানান, শীতজনিত কারণে হাসপাতালগুলোতে ইনডোর ও আউটডোরে ১০ভাগ রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বেশি। বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। কোভিডকালীন সময়ে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার ও  নেবুলাইজার সংগ্রহে থাকায় রোগীদের সেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে না। তবে প্রয়োজন ছাড়া বয়স্ক ও শিশুদের বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। 

কোনো উপসর্গ থাকলে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে পরামর্শ নিতে বলা হচ্ছে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, চলতি বছর জেলায় ৭ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে বীজতলা হয়ে গেছে। এই তীব্র শীতে বীজতলার যাতে ক্ষতি না হয় এজন্য কৃষকদের বীজতলা পরিচর্চার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। রাতে পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে এবং সকালে দড়ি দিয়ে বীজতলার শিশির সরাতে লিফলেটের মাধ্যমে সচেতন করা হচ্ছে।  জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ জানান, এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আরো ৩ হাজার শীতবস্ত্র শীতার্তদের মাঝে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও দু’দফায় আরো ২৫ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে। আমরা শীতার্তদের পাশে রয়েছি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom