কোন মানুষেরই নিরাপদে জীবন-যাপন করার কোন উপায় নেই: মির্জা ফখরুল
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ কোন মানুষেরই নিরাপদে জীবন-যাপন করার কোন উপায় নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার লক্ষীপুরে এবং আজ ফেনী ও পিরোজপুরে বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ যৌথভাবে হামলা চালিয়ে অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করার ন্যাক্কারজনক ও বর্বরোচিত ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “রাষ্ট্র এখন সর্বগ্রাসী সন্ত্রাসী রুপ ধারণ করেছে। জুলুমবাজ আওয়ামী সরকারের কোন বৈধতা নেই বলেই সন্ত্রাসের ওপর অতি মাত্রায় নির্ভর করছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ কোন মানুষেরই নিরাপদে জীবন-যাপন করার কোন উপায় নেই। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও দেশকে নরকপুরীতে পরিণত করেছে। প্রতিদিন শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই বিএনপিসহ সাধারণ মানুষের রক্তে হাত রঞ্জিত করছে তারা। তাদের অবৈধ অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে কেউ যাতে উচ্চস্বরে কথা বলতে না পারে সেজন্য তারা রক্ত ঝরানোর কর্মসূচি হাতে নিয়ে সবাইকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ দেশে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে গিয়ে তারা তাদের বিরোধী লোকজনদের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে অথবা মিথ্যা মামলায় জেলে ভরছে।
তিনি বলেন, এখন বিরোধী মত, মানুষের বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং জনগণের স্বাভাবিক চলাচল চরম হুমকির মুখে। আওয়ামী লীগ এখন নিষ্ঠুর ফ্যাসিষ্ট হিসেবে বিশ^ দরবারে পরিচিতি লাভ করেছে। সরকারের হিং¯্ররুপী আচরণের জন্য দেশে-বিদেশে সর্বত্রই^ ধিকৃত হচ্ছে। ২০১৮ এর মতো আর একটি ভোট চুরির নির্বাচন করে তারা আবারো ক্ষমতায় যেতে চাই বলেই বিএনপি সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর দমননীতি কার্যকর করছে। এরই ধারাবাহিকতায় লক্ষীপুরে ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর পৈশাচিক হামলা চালিয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক হাসিবুর অভি, সদর উপজেলা (পশ্চিম) ছাত্রদলের আহবায়ক আব্দুল মজিদসহ ৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে। এসময় তারা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজের বাসায় অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে, লক্ষীপুর জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশের মঞ্চ, প্যান্ডেল ইত্যাদি ভাংচুর করে। এছাড়া, ফেনীতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী ও পুলিশ যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ২০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করেছে। পিরোজপুরে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা চালিয়ে আওয়ামী ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা ১৭ জন নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে। সরকার নিজেদের পতন টের পেয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে বলেই নির্যাতন-নিপীড়ণ ও হামলা চালিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মনে ভীতির সঞ্চার করে আন্দোলন-সংগ্রাম দমন করতে চায়। কিন্তু এসব অপকর্ম সংঘটন করে কোন লাভ হবে না। তারা এমন বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছে যে, কোন সমালোচনাকেই পাত্তা না দিয়ে গুম-খুন-ক্রস ফায়ার, হামলা ও মিথ্যা মামলার মতো অমানবিক কাজ থেকে সরে আসছে না। যারা দেশের সম্পদ লুট এবং বিদেশে পাচার করে দেশ শাসন করার বৈধতা তাদের নেই। এরা বেআইনী ও অবৈধ সরকার। জনগণের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। বর্তমান সরকারকে প্রতিহত করার জন্য জনগণ সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে অবিলম্বে লক্ষীপুর, ফেনী ও পিরোজপুরসহ অন্যান্য স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান। তিনি আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।