প্রথম নিউজ, ডেস্ক: এও এক আজব গ্রাম। যে গ্রামের সবাই দৃষ্টিহীন, এমনকী গৃহপালিত পশুরাও। যে শিশুরা ভূমিষ্ঠ হয় তাদের প্রথম দৃষ্টিশক্তি থাকলেও, বড়ো হয়ে ওঠার পর তাঁদেরও দৃষ্টিশক্তি চলে যায়। কিন্তু কেন ঘটে এমন আজব ঘটনা! কী এমন অভিশাপ লুকিয়ে রয়েছে এই গ্রামে! আগে জেনে নেওয়া যাক এই গ্রামের ঠিকানা কোথায়, কোথায় গেলে এমন গ্রামটি খুঁজে পাওয়া যাবে। দেখলে আর পাঁচটা গ্রামের মতোই লাগে এই গ্রাম। সাজানো গোছানো ঘর রয়েছে, রয়েছে সবুজ গাছগাছালি। বেশ মনোরম পরিবেশ, তবু কেন এই প্রতিবন্ধকতা?
রামে বাস করেন তিনশো জনের মতো মানুষ। ঘর রয়েছে ৭০টি। ধরে নেওয়া যেতে পারে ৭০ পরিবারে বাস ৩০০ জনের। স্বাভাবিক পরিবেশ থাকলেও তাঁরা কেউই স্বাভাবিক জীবনে নেই। প্রত্যেকের জীবনে অন্ধত্বের অভিশাপ লেগে রয়েছে। কারো দৃষ্টিশক্তি নেই। গ্রামে যে শিশু জন্মগ্রহণ করে, সেই শিশুও কিছুদিন পরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে। প্রথম সে দৃষ্টিশক্তি নিয়ে জন্মালেও কিছুদিনের মধ্যে সেও হয়ে যায় দৃষ্টিহীন। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। প্রজন্মের পর প্রজন্ম। সুন্দর পৃথিবীর মনোরম দৃশ্য তাঁরা দেখতে পান না।
এই অন্ধকার দুনিয়া বিরাজ করছে মেক্সিকোয়। মেক্সিকোর এই গ্রামের নাম টিলটেপেক। এই গ্রামের কথা জানার পর বহু বিজ্ঞানীও সচেষ্ট এই গ্রামের রোগমুক্তি ঘটাতে। কিন্তু কেন তাঁরা দৃষ্টিহীন সেই রহস্যেরই সমাধান করতে পারেন না তাঁরা। এখনও সছিক অর্থে সমাধান সূত্রই বের করতে পারেননি তাঁরা। গ্রামের বাসিন্দারা মনে করেন, এ এক অভিশাপ। যাঁরা এ গ্রামে জন্মায় তাঁরা অভিশাপ মাথায় নিয়েই জন্মায়। কিন্তু একজন শিশু তো যখন জন্মায় তখন তাঁর দৃষ্টিশক্তি থাকে? গ্রামে প্রচলিত রয়েছে, এ গ্রামে এমন একটি গাছ রয়েছে, যার দিকে তাকালেই দৃষ্টিশক্তি চলে যায়!
সেই গাছের নাম লাভাজুয়েলা। গ্রামে আরও প্রচলিত রয়েছে, ওই গাছ কাটাও ভয়ের। গাছ কাটকতে গেলে আরো বড়ো ক্ষতি হতে পারে বলে বিশ্বাস গ্রামবাসীদের। কিন্তু বিজ্ঞানীরা আবার তা মনে করেন না। তাঁরা মনে করেন, এই গ্রামের বাসিন্দাদের দৃষ্টিশক্তি হারানোর পিছনে রয়েছে এক ধরনের মাছি।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, জঙ্গলে ঘেরা এই গ্রামে বিষাক্ত মাছির উপদ্রব রয়েছে। যা কামড়ে বসলে যে কোনো প্রাণী দৃষ্টিশক্তি হারায়। এই মাছির বিষেই অন্ধকার নেমে এসেছে গ্রামে। মানুষের পাশাপাশি গৃহপালিত পশু বা অন্যান্য প্রাণীও এ গ্রামে দৃষ্টিশক্তিহীন।