উত্তরাধিকারী সনদের জন্য ২০ হাজার টাকা নিলেন সিসিক কাউন্সিলর
ঘুষ নেওয়ার একটি অডিও ও ভিডিও শনিবার (২২ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
প্রথম নিউজ, সিলেট: সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবুল কালাম লায়েকের (এ কে লায়েক) বিরুদ্ধে উত্তরাধিকারী সনদের জন্য ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘুষ নেওয়ার একটি অডিও ও ভিডিও শনিবার (২২ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
ভাইরাল অডিও ও ভিডিওতে এক ব্যক্তির সঙ্গে উত্তরাধিকারী সনদের জন্য কাউন্সিলর লায়েককে দর কষাকষি করতে শোনা যায়।
ওই ব্যক্তি মোবাইল ফোনে কাউন্সিলর লায়েককে সালাম দিয়ে বিকাশ নম্বরে টাকা দিতে চাইলে কাউন্সিলর বলেন, তোমার বিকাশ নম্বরে টাকা আনাও (নিয়ে আসো)। পরে আবার কল দিয়ে ওই ব্যক্তি নিশ্চিত করে জানান, টাকা তার কাছে এসেছে। কাগজ কোন সময় দেবেন? তখন কাউন্সিলর বলেন, তুমি রাতে দেখা করিও, সকালে কাগজ নিয়ে যাবে। তুমি টাকা উঠিয়ে নিয়ে আসো, আমি করাইয়া দিমু।
এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তি বলেন, আমি ছাতক যাচ্ছি। সেখান থেকে ফিরে টাকা নিয়ে আসব। তখন কাউন্সিলর বলেন, তোমাকে বাগবাড়িতে দেখলাম হেঁটে যাচ্ছ। তিনি বলেন, সেখান থেকে ফিরে আসব, এই তো যাচ্ছি। অডিওতে দুই ধাপে ১০ হাজার করে ২০ হাজার টাকা কাউন্সিলরকে দেওয়ার প্রস্তাবের বিষয়টি পরিষ্কারভাবে শোনা যায়। এক পর্যায়ে কাউন্সিলর লায়েক বলেন, আমার ভোটের দরকার নাই। ইতা আমরার কারবার নায়, ডিসি অফিস থেকে আনতে হয়। পুরা টাকা দিলে রাতেই নিতে পারবা। তিনি আরও বলেন, তোমরা বুঝ না, আফতাবের (৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর) ওয়ার্ডেও টাকা লাগে।
পরবর্তীতে আরেকটি অডিওতে ডিসি অফিসের নাম ভাঙিয়ে টাকা চাইতে শোনা যায়। সেই অডিওতে বলা হয় ‘আমি ডিসি অফিস থেকে বলছি। মৃত আব্দুর রশিদের উত্তরাধিকারী সনদের জন্য আবেদন করেছেন। কাউন্সিলর অফিস থেকে টাকা দিয়ে নেওয়ার জন্য বলেন, টাকা দিলে রাতেই নিতে পারবেন। যদিও ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন, এটি কাউন্সিলর লায়েকের অফিস সহকারীর কণ্ঠ ছিল।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শাহিন আলম এহসান বলেন, জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে উত্তরাধিকারী সনদ দিতে কাউন্সিলর লায়েক আগেও ভুগিয়েছেন। আগের সনদ ৬ মাস অতিক্রান্ত হওয়ায় ফের সনদ আনতে গেলে ডিসি অফিসের দোহাই দিয়ে তিনি খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা চান। পরে নিজে তার কার্যালয়ে যান। কাগজপত্র ঠিক থাকলেও বিভিন্ন টালবাহানা করেন। পরবর্তীতে কেয়ারটেকার নান্নুর মাধ্যমে গেলে ২০ হাজার টাকা দিয়ে উত্তরাধিকারী সনদ নেন।
এদিকে সিসিকের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, উত্তরাধিকারী সনদ একজন নাগরিক বিনা মূল্যে পেতে পারেন। কাউন্সিলররা কেবল যাচাই-বাছাই করে দেবেন। সামগ্রিক অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে কাউন্সিলর লায়েক বলেন, কোনো উত্তরাধিকারী সনদের জন্য আমি টাকা নেইনি। আর এভাবে কী কেউ প্রকাশ্যে ঘুষ নেয়। তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল কাউন্সিলর লায়েকের বাসা থেকে ১২৫ বস্তা সরকারি ত্রাণের চাল উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন কাউন্সিলর লায়েক। এ ঘটনার পর স্বেচ্ছাসেবক লীগ বিবৃতি দিয়ে বলে লায়েক স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেউ নয়।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews