আ’লীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আজ

১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার কে এস দাস লেনের রোজ গার্ডেনে দলটির প্রতিষ্ঠা হয়।

 আ’লীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আজ

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগ এক ও অভিন্ন এবং বাঙালি জাতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস মানে বাঙালি জাতির সংগ্রাম ও গৌরবের ইতিহাস। এ রাজনৈতিক দলটি বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনীতি এবং বাঙালি জাতির আন্দোলন-সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক।
আজ বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের  ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার কে এস দাস লেনের রোজ গার্ডেনে দলটির প্রতিষ্ঠা হয়।
প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এ দলটির নেতৃত্বেই এ দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। রোজগার্ডেনে জন্ম নেওয়ার পর থেকে নানা লড়াই, সংগ্রাম ও চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দলটি এখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়।

আওয়ামী লীগের ইতিহাস থেকে জানা যায়, এ দেশের অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও তরুণ মুসলিম লীগ নেতাদের উদ্যোগে ১৯৪৯ সালের ২৩-২৪ জুন পুরান ঢাকার কে এম দাস লেনের বশির সাহেবের রোজ গার্ডেনের বাসভবনে একটি রাজনৈতিক কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
মুসলিম লীগের প্রগতিশীল নেতা-কর্মীরা সংগঠন থেকে বেরিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন আওয়ামী মুসলিম লীগ। প্রথম সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন প্রথম কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক।

১৯৬৬ সালের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ’৬৯ এর গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসক-শোষক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালির যে জাগরণ ও বিজয় সূচিত হয়, সেই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল আওয়ামী লীগ এবং এই আন্দোলনের পথ ধরেই বাঙালি জাতি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর নেতৃত্ব শুন্যতায় পড়ে আওয়ামী লীগ। এরপর দলের মধ্যে ভাঙনও দেখা দেয়।

১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। তার নেতৃত্বে দ্বিধা-বিভক্ত আওয়ামী লীগ আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়। তিন দশক ধরে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পরিচালিত হচ্ছে। এই সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পেরেছে দলটি।

প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছরের মধ্যে প্রায় ৫০ বছরই আওয়ামী লীগকে থাকতে হয়েছে রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সরকারের সাড়ে তিন বছর এবং ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পাঁচ বছর এবং ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনা করছে।
 ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়। ফলে আবারও নতুন সংকটের মুখে পড়ে দলটি। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাসহ প্রথম সারির অসংখ্য নেতাদের গ্রেফতার এবং দলের একাংশের সংস্কার তৎপরতায় দলটির কার্যক্রমে কিছুটা সংকট তৈরি হয়।

তবে সব প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও মহাজোট ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করে। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি গঠিত হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা।

পরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে এবং তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে এবং শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন।

নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী, ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর সুখী এবং সমৃদ্ধ ‘ডিজটাল বাংলাদেশ’ গড়াসহ এ দেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে বর্তমানে কাজ করছে দলটি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom