আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করা সেই কিশোরীর সন্তান প্রসব

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সবার দাবি, তাহলে এই শিশুর প্রকৃত বাবা কে?

আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করা সেই কিশোরীর সন্তান প্রসব

প্রথম নিউজ, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করা কিশোরী একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। গত বুধবার সন্ধ্যায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে টাঙ্গাইল শহরের রেজিস্ট্রিপাড়ার ব্যুরো বাংলাদেশ হাসপাতালে কিশোরীর সন্তান প্রসব করানো হয়।

ভর্তির সময় হাসপাতালের কাগজপত্রে শিশুটির অভিভাবকের নাম সৌরভ লেখা আছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানান, ওই কিশোরী বুধবার বিকালে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে সার্জন মালেকা শফি সিজারিয়ান অপারেশন করেন। নবজাতককে নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) রাখা হয়েছে।

ডা. মালেকা শফি মঞ্জু বলেন, বর্তমানে ওই কিশোরী সুস্থ রয়েছেন। তবে নবজাতকটি কিছুটা অসুস্থ থাকায় এনআইসিওতে রাখা হয়েছে। ওই কিশোরী আমাদের দ্রুত সিজার করতে বলেন। তিনি ৩৭ সপ্তাহের গর্ভবর্তী ছিলেন। গোলাম কিবরিয়া বড় মনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই এবং জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব। ওই কিশোরীর করা মামলায় বড় মনি এখন কারাগারে রয়েছেন।

এ কিশোরী গত ৫ এপ্রিল টাঙ্গাইল সদর থানায় করা মামলায় অভিযোগ করেন, গোলাম কিবরিয়া গত বছর ১৭ ডিসেম্বর তাকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এতে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে গত ২৯ মার্চ তার (বড় মনি) শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে তাকে মারপিট করা হয় এবং বড় মনি তাকে আবার ধর্ষণ করেন। মামলায় বড় মনির স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়। তিনি জামিনে আছেন।

এ মামলাকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল সমাবেশ হয়। মামলা করার পর সংসদ সদস্য ছোট মনির সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ওই কিশোরীকে দিয়ে মামলা করিয়েছেন। মামলাটি বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে। 

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম মিয়া জানান, মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে। এরপরও বর্তমানে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ নবজাতকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্ব পালন করছে। পিবিআই টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. সিরাজ আমীন জানান, ওই কিশোরীর সন্তান জন্মদানের খবর তারা পেয়েছেন। 

এখন ওই সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে সিরাজ আমীন বলেন, তদন্তের স্বার্থে যা যা প্রয়োজন সব করা হবে।