ক্যাম্পাসে আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে: ছাত্রদল

আজ বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’- কর্মসূচিতে তিনি এই কথা বলেন।

ক্যাম্পাসে আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে: ছাত্রদল

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বাংলাদেশের সকল ক্যাম্পাসে আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। আজ বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’- কর্মসূচিতে তিনি এই কথা বলেন। এর আগে দুপুর ২টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে কর্মসূচি শুরু করে ছাত্রসংগঠনটি। পরে বিশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগ হয়ে শহীদ মিনারে পৌঁছান নেতাকর্মীরা। মিছিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

রাকিব সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে যেহেতু খুনি হাসিনার মতো ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, তাই এখানে আর কোনো আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতির বাস্তবতা নেই।
তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এক এবং ঐক্যবদ্ধ আছি। যারা জুলাই-আগস্টের আন্দোলনকে কুক্ষিগত করতে চায়, তারা যেন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে। আমি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করতে চাই, আপনারা এমন কোনো কর্মকাণ্ড করবেন না, যার দ্বারা ঐক্য নষ্ট হয়।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সদিচ্ছা পোষণ করছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের একজন নেতাকর্মীকে বিচারের আওতায় আনার জন্য সামান্যতম সদিচ্ছা পোষণ করছে না। সরকার ভেবেছে, ছাত্রলীগকে শুধু দায়সারা নিষিদ্ধ করলে তাদের অপকর্ম ঢাকা পড়ে যাবে।তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের শনাক্ত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে তদন্ত কমিটি হয়েছে। কিন্তু সাড়ে পাঁচ মাস পরেও আমরা কোনো প্রতিবেদন পাইনি। দ্রুত ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে। তাদের ছাত্রত্ব বাতিল ও আইনের আওতায় আনতে হবে।

সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, সে খুনি সংগঠন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখলাম ছাত্রদলের এখনো কোনো শীর্ষ সন্ত্রাসীকে অন্তর্বর্তী সরকার গ্রেপ্তার করতে পারেনি। শুধুমাত্র শীর্ষ সন্ত্রাসী নয়, প্রত্যেকটি জেলায় ছাত্রদলের যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী রয়েছে, তারা এখন ঢাকায় অবস্থান করছে। ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানাচ্ছি। যেসব আওয়ামী লীগের দোসর জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করার দাবি জানাই।

ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ঢাকা  বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে স্বৈরাচারের দোসররা এখনো বহাল তবিয়তে আছে। যারা হাসিনাকে সাহায্য করেছে, তারা থেকে গেলে জুলাই-আগস্টের স্পিরিট বিনষ্ট হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের আইনের আওতায় আনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

মার্চ ফর জাস্টিসে ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, মহানগর উত্তরের সভাপতি মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান লিপকন, দক্ষিণের সভাপতি শামীম মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি মো. সোহাগ ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হান্নান মজুমদার, ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সভাপতি মো. রবিন খান এবং সাধারণ সম্পাদক আকরাম আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।