আপত্তিকর ভিডিও কাণ্ডে আলোচনায় সংসদ সদস্য এনামুল
সম্প্রতি এক তরুণীর সঙ্গে ভিডিওকলে ৫ মিনিট ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
প্রথম নিউজ, রাজশাহী: এবার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়া নিয়ে আলোচনায় রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। সম্প্রতি এক তরুণীর সঙ্গে ভিডিওকলে ৫ মিনিট ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যদিও ভিডিওটিকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছেন এমপি এনামুল। ভিডিওতে এমপি এনামুল ওই তরুণীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি যত টাকা লোন নিয়েছি তার ১০ গুণ টাকার তো গাড়িই আছে, সম্পত্তি আছে কয়েক হাজার কোটি টাকার। আমার সম্পত্তি দিয়ে তোমার লাভ কি? আমি যে গাড়িতে চড়ি সেই গাড়িটার দাম ৬ কোটি টাকা, ৪টা গাড়ি আছে ৬ কোটি টাকা দামের। আমার বউ যে গাড়িতে চড়ে সেটাও সাড়ে ৪ থেকে ৫ কোটি টাকা দাম, আমার ছেলে চড়ে সেটাও অনেক দামি গাড়ি। আমার ঢাকায় একটা গাড়ি, রাজশাহীতেও একটা সেটআপ আছে। পাজেরো গাড়িই আছে ৭টা। কে বলছে তোমাকে এ রকম ফালতু কথাবার্তা?’ তিনি বলেন, ‘আমার হাজার কোটি টাকা লোন থাকলে তার সমস্যা কি? কথা বলো না কেন? ফোন রেখে দিবো কিন্তু। আমাকে আর ১০ মিনিট পাবা তারপর আমি ঘুমিয়ে যাবো।
এ সময় অপর প্রান্তের মেয়েকে কিছু বলতে দেখা যায়, তবে তার কোনো কথা শোনা যায়নি।’ এমপি এনামুলকে আবারো বলতে শোনা যায়, ‘আগেই নিচে? আগে মুখটা দেখো। অপর প্রান্তের কথার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, না, পরে। সব দেখতে হয় না। আমিও কালকে থেকে পারবো না, আমার বউ থাকবে। আমি যখন রাজশাহী থাকবো তখন আবার একা থাকবো, তখন পাবা।’ এরপরই কাপড় খুলে শুরু হয় অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি। অশ্লীল কথাবার্তা ও অঙ্গভঙ্গি শেষে মেয়েকে ঘুমাতে বলে ফোন কেটে দেন এমপি এনামুল হক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনামুল হক বলেন, আমিও শুনছি। এটা বানোয়াট ও ভুয়া। আমার আইডি হ্যাক করে প্রতিপক্ষ এটা করেছে। কোন আইডি থেকে এটা করা হয়েছে সেটা মনিটরিং করবো অবশ্যই। আমি আইসিটি মিনিস্ট্রিকে বলছি, একটা মামলা করবো। বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত আপত্তিকর ভিডিও প্রচার বা মানহানির অভিযোগ এনে কেউ কিছু বলেননি।
এর আগে গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজশাহী মহানগরের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের নারীর সঙ্গে ফোনে যৌন সম্পর্ক ফাঁস’ শিরোনাম একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যাতে তাকে নগ্ন অবস্থায় দেখা যায়। ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে চারিদিকে তোলপাড় শুরু হয়। এরপরই ১৮ই ফেব্রুয়ারি দুপুরে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা করেন আওয়ামী লীগ নেতা ডাবলু। মামলায় তিনি রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে এডিটিংয়ের করে অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে সম্মানহানির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন। পরে গত ২রা মার্চ সকালে একই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ‘সচেতন রাজশাহীবাসীর’ ব্যানারে সাহেব বাজারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। একই ঘটনায় গত ২৭শে মার্চ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের ব্যানারে নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ডাবলু সরকারকে নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত রাজনীতির দুষ্টক্ষত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়। সবশেষ ২৯শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়।