আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া, আটক ৬
এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে আন্দোলন
প্রথম নিউজ, ঢাকা: এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে শাহবাগ অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। এসময় সেখান থেকে ৬ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। আজ সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেলের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে দুপুরে এইচএসসি পরীক্ষা এক মাস বা দুই মাস পেছানো অথবা সিলেবাস কমানোর দাবিতে শাহবাগে এ বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। পরে বিক্ষোভটি কাঁটাবন হয়ে সায়েন্স ল্যাব মোড়ের দিকে যায়। এ সময় রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা অনেক কম সময় পাচ্ছি। এই সময়ে পুরো সিলেবাসের পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের সিলেবাস কমিয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হোক অথবা পরীক্ষা এক মাস বা দুই মাস পিছিয়ে দেওয়া হোক। ১০০ নম্বরের পরীক্ষা আমরা মানি না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে যাব।
তারা জানান, ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা প্রায় আড়াই বছর সময় পেয়েছে। আড়াই বছর সময় নিয়ে তাদের পরীক্ষা হয় ৫০ নম্বরের। কিন্তু ২০২৩ সালে পরীক্ষার্থীরা মাত্র দেড় বছর সময় পেয়েছে। তুলনামূলক এক বছর কম সময় পাওয়ার পরও তাদের ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। গত বছর আইসিটি সাবজেক্টের পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। কিন্তু এবার আইসিটি সাবজেক্টও পরীক্ষা দিতে হবে। এবারের পরীক্ষায় আইসিটি বিষয়টি বাদ দেওয়ার দাবিও করেন তারা।
এবারের পরীক্ষা নিয়ে বেশকিছু দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন পরীক্ষার্থীরা। শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ডের ইমেইল ও সামাজিকমাধ্যমে বার্তা পাঠাচ্ছেন তারা। তবে পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের মতামতের কোনো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) কালবেলা অনলাইনে একটি মতামত জরিপ শুরু করা হয়। মতামত জরিপে দেখা যায়, প্রায় ৮৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা পেছানোর পক্ষে। কালবেলার মতামত জরিপের বিষয় ছিল, ‘এইচএসসি-২৩ ব্যাচের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা পেছানো অথবা সিলেবাস কমানোর দাবি করছে। আপনি কী মনে করেন?’এই প্রশ্নের চারটি সম্ভাব্য উত্তর রাখা হয়। শনিবার দুপুরে এ খবর লেখা পর্যন্ত চারটি উত্তরে মোট মতামত দিয়েছেন ২৮ হাজার ৯৫২ জন। এর মধ্যে ৮৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ পরীক্ষা পেছানোর পক্ষে। সিলেবাস কমানোর পক্ষে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। ২ দশমিক ২২ শতাংশ মতামত দিয়েছে ‘দুটিই করা উচিত’, এবং ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ মতামত দিয়েছে ‘কোনোটিই করা উচিত নয়’।
এ সব বিষয় নিয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বছর শিক্ষার্থীরা কম সময় পেয়েছে। এ জন্য তাদের সিলেবাসও পরিমার্জিত। কম সময়ে যে পরিমাণ সিলেবাস শেষ করা সম্ভব সেই পরিমাণ সিলেবাস রাখা হয়েছে। আপনাদের কাছে শিক্ষার্থীরা যা বলছে তা পুরোটা সঠিক না। এইচএসসি ২০২৩ ব্যাচের পরীক্ষার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে খুব শিগগিরই একটি সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলেও জানান তিনি।