আজ আন্তর্জাতিক বিশ্বও বলে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই : ড. মোশাররফ
আজ আন্তর্জাতিক বিশ্বও বলে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ আন্তর্জাতিক বিশ্বও বলে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, আমরা বাংলা ভাষা অর্জনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এ স্বাধীনতা অর্জনের মূল চেতনা ছিল গণতন্ত্র। কিন্তু আজ ৫১ বছর পর যখন আলোচনা করতে দাঁড়াই, সবাই বলি, দেশে গণতন্ত্র নেই। কেবল আমরাই নই, আজ আন্তর্জাতিক বিশ্বও বলে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই।’ সোমবার বিকেলে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমেরিকায় গণতান্ত্রিক সম্মেলনে বাংলাদেশ পরপর দু’বারই আমন্ত্রণ পায়নি। পাবে কিভাবে? বিদেশীরা তো পরিষ্কারভাবেই বলেছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। যারা শাসন করছে, তারা তো হাইব্রিড শোষক।’ তিনি আরো বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এ দেশে বারবার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। প্রথম হত্যা করেছিল স্বাধীনতার পর একদলীয় বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে। এখন আবার গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্য গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আজ মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্ছিত। শুধু সংসদ নির্বাচন থেকেই নয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতেও জনগণ ভোট দিতে পারে না তারা। ভোট আগেই নির্ধারিত হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ সরকার এভাবেই গণতন্ত্রকে হত্যা করছে।’ তিনি বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের মূল চেতনা ছিল, একজন মানুষ মুক্ত স্বাধীনভাবে যা চিন্তা করবে, সেভাবেই তা প্রকাশ করতে পারবে। এখন আমি যা চিন্তা করি, সেটা যদি স্বাধীনভাবে বলতেই না পারি, তবে এই ভাষার কি তাৎপর্য থাকে? কিন্তু আজ মানুষ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সে অধিকারটুকুও পায় না।
আওয়ামী লীগ মুক্তচিন্তা রুখতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বারবার হস্তক্ষেপ করেছে অভিযোগ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘প্রথম ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন নিউজ পেপারস সংশোধনী অ্যাক্ট করে পুরো দেশের সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। রেখেছিল কেবল চারটি সংবাদপত্র। এতে হাজার হাজার সাংবাদিক বেকার হয়েছিল। দ্বিতীয়বার যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলো, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ১৯৯৯ সালে টাইমস-দৈনিক বাংলা ট্রাস্ট্রের চারটি পত্রিকা বন্ধ করে দিলো। তারপর দেখলাম, ২০১০ সালে ২৭ এপ্রিল চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে দিলো।’ ‘২০১৩ সালে দৈনিক আমার দেশ, দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টেলিভিশন বন্ধ করে দিলো। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রকাশিত পত্রিকা দৈনিক দিনকালকেও গতকাল তারা (সরকার) বন্ধ করে দেয়। অর্থাৎ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তার মাধ্যমকে এ সরকার যখনই সুযোগ পেয়েছে, তখনই বন্ধ করে দিয়েছে।’ এ সময় তিনি এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার হটানোর ১০ দফা দাবির চলমান আন্দোলনকে সফল করার জন্য জনগণকে শপথ নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আজ ভাষা দিবসে আমাদের শপথ হোক- ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে যত শিগগির সম্ভব, এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে হবে। এটা যত দ্রুত পারা যাবে, দেশের জন্য ততই মঙ্গল হবে।’ আলোচনা সভায় সভাপতিত্বে করার কথা ছিল দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। কিন্তু তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দলের প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবদুল হাই, কবি মাহবুব হাসান ও আ ন ম ফজলুল হক সৈকত বক্তব্য রাখেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: