আগুন সন্ত্রাসীদের ছাড় দেওয়া হবে না : হানিফ
প্রথম নিউজ, ঢাকা : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, আগুন সন্ত্রাসীদের কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
রোববার বিকেল ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী পুলিশ হত্যা করে, পুলিশের ওপর আক্রমণ, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে আক্রমণের পর সমাবেশ পণ্ডু হওয়ার কারণে তারা হরতাল দিচ্ছে। নিজেরা অপকর্ম করে তার দায় অন্যের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে। এবার আর রক্ষা হবে না। এই অপকর্মের দায় মির্জা ফখরুল সাহেবদের বহন করতে, এদের আর ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি দেশে এবং বিদেশে সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত। বাংলাদেশ বিএনপি নামক দলটি ইতোমধ্যে সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আমরা বারবার বলেছি, এদের চরিত্র কখনোই পালটাবে না। গতকালের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে তাদের স্বরূপ উন্মোচন হয়েছে। আবারেও প্রমাণ হয়েছে তারা উন্নয়ন চায় না, দেশ ধ্বংস করতে চায়।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। বাংলাদেশে বহু আন্দোলনে হয়েছে। আমরাও বহু আন্দোলন করেছি। আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া দল। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ে লড়াই সংগ্রাম করেছে, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বহু আন্দোলন করেছি। জাতির পিতার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, এই স্বাধীন বাংলাদেশেও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বহু আন্দোলন হয়েছে। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হয়েছিল, ১৯৯৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার চেষ্টা করেছেন আমরা আন্দোলন করে পতন ঘটিয়েছিলাম।এরপর ২০০৬ সালে আবার অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তাদের অগণতান্ত্রিক পথ অনুসরণ প্রতিহত করেছিলাম তখনও পুলিশের ওপর আক্রমণ করা হয়নি। বরং বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে আমরা বারবার নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
ঢাকার রাজপথে আমাদের প্রয়াত নেতা সাহারা খাতুন, প্রয়াত নেতা নাসিম, আজকের সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, সাবের হোসেন চৌধুরী, আসাদুজ্জামান নুরের মতো সিনিয়র নেতাদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছিল। তারপরও আমরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করেনি, বলেন হানিফ।
তিনি বলেন, অথচ আমরা দেখছি ২০১৩ সালে পর থেকে প্রত্যেক আন্দোলনে মূল টার্গেট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ২০১৩ সালে গাইবান্ধায় পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ করে পিটিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। আমরা দেখেছিলাম রাজশাহীতে। কীভাবে পুলিশ পিটিয়ে রাজপথে ফেলে রেখেছিল। বিএনপি যখনি আন্দোলনে নামে তখনই দেখা যায়, তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করে। তারা এ দেশকে ধ্বংস করতে চায়, দেশের প্রশাসন যন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়।
সুশীল সমাজের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি জামায়াতের এই অপকর্মের কিছু সুশীল সমাজ টেলিভিশনে বসে তাদের পক্ষে সাফাই গান। এরা কারা? এরা তথাকথিত সুশীল সমাজের নামে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি। এই দালালদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। এরা সুশীলের নামে বসে দেশের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক কথা বলে দেশের রাজনীতি উত্তপ্ত করতে চায়। এদেরকেও আইনের মুখোমুখি করতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তাফ জালাল মহিউদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন প্রমুখ।