আইনি নোটিশ প্রসেঙ্গ যা জানালেন তাসনিম জারা

আইনি নোটিশ প্রসেঙ্গ যা জানালেন তাসনিম জারা

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারাসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশ্লীলতা ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে একটি আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। পুরোনো কৌশলে বিভ্রান্ত হবেন না বলেও জানিয়েছেন জারা। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে তিনি এই কথা জানান।

তাসনিম জারা লিখেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে, আমার ছবিসহ একটি আইনি নোটিশ মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে এবং একটি হাস্যকর অভিযোগ যে আমি একটি ‘পর্নোগ্রাফিক কালচার’ প্রচার করছি। এমন ভিত্তিহীন বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং আমি কথা বলতে চাই কারণ নীরবতাকেও ভুল বোঝা যায়।’
 
তিনি বলেন, ‘যখন আপনি পরিষ্কার হাত ও খোলা মন নিয়ে জনজীবনে প্রবেশ করেন, তখন আপনি মনে করেন যে সংগ্রাম হবে চিন্তা নিয়ে, নীতি নিয়ে, স্বপ্ন নিয়ে।
কিন্তু তারা আপনার চিন্তার সঙ্গে সঙ্গে বিতর্ক করার আগেই আপনার নাম কলুষিত করার চেষ্টা করে। এটি একটি পুরোনো কৌশল, যা লজ্জা দেওয়া, মনোযোগ সরানো এবং বিকৃত করার জন্য নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি বিভ্রান্ত হব না এবং এমন লজ্জা বহনও করব না, যা আমার নয়।’
 
‘বহু বছর ধরে আমি জনস্বাস্থ্যসেবায় কাজ করেছি, মানুষের সাহায্য করার জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে অতিরিক্ত সময় দিয়েছি।
আমার নাম ব্যবহার করে ভুয়া পেজ এবং ভেজাল ওষুধ সম্পর্কে আমি বারবার জনসাধারণকে সতর্ক করেছি। যারা এখন সেটাকে একটি শিরোনামে বিকৃত করার চেষ্টা করছে, তারা একটি বিষয় ভুলে গেছে, তবে মানুষ মনে রেখেছে,’ যোগ করেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক।
 
তাসনিম জারা বলেন, ‘আমি আরামের জন্য এখানে আসিনি। আমি জেনেই এসেছি যে এটি কঠিন হবে। জেনেই এসেছি যে এটি নোংরা হবে।
কিন্তু আমি এই বিশ্বাস নিয়েও এসেছি যে আমরা ভিন্নভাবে, সততার সাথে, শালীনতার সাথে, সাহসের সাথে রাজনীতি করতে পারব।’
 
তিনি আরো বলেন, ‘সুতরাং, যারা আশা করছেন এ ঘটনা আমার গতি মন্থর করে দেবে তাদের বলছি– না, আমি পিছপা হব না। না, আমি লুকাব না। না, আমি আপনাদের ফাঁদে পা দেব না। বরং, এই অবস্থান আমার সংকল্পকে আরও দৃঢ় করেছে। কারণ যখন মিথ্যাই অবশিষ্ট থাকে, এর মানে হলো আপনার সত্য ইতোমধ্যে যুক্তিতে জিতেছে। তাদের কথা বলতে দিন। আমি কাজ চালিয়ে যাব।’
 
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, লাইকিসহ সব অনলাইন মাধ্যমে অশ্লীল ও পর্নোগ্রাফিক ভিডিও, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বন্ধ করতে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। এতে ডা. জাহাঙ্গীর কবির ও ডা. তাসনিম জারাসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশ্লীলতা ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
 
এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেবে বলেও নোটিশে জানানো হয়।

বাংলাদেশে নির্বাচন কবে হবে, এখনো সে ব্যাপারে কোনো রোডম্যাপ দেওয়া হয়নি। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা মেরুকরণ হচ্ছে। দৃশ্যমান হচ্ছে, ছোট ছোট দলগুলোকে ঘিরে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি'র পৃথক পৃথক বলয় তৈরির তৎপরতা। জামায়াত-বিএনপি যখন রাজনীতিতে আলাদা বলয় তৈরির চেষ্টা করছে, তখন নতুন দল এনসিপি কোন দিকে ঝুঁকবে? 

এনসিপি অবশ্য বলছে, তারা কোনো জোটের দিকে ঝুঁকছে না।
কিন্তু দলটির সাম্প্রতিক কার্যক্রমে সন্দেহ বাড়ছে। গত রোববার এনসিপির নেতাদের বৈঠক করতে দেখা গেছে খেলাফত মজলিসের নেতাদের সঙ্গে। এর আগে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সঙ্গেই আলোচনায় বসেছিলো জাতীয় নাগরিক পার্টি -এনসিপি।

এনসিপির এভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও বৈঠকের ফলে এই প্রশ্ন উঠছে যে, দলটি কি তাহলে নিজেরাই আলাদা কোনো জোট গঠন করছে? জানতে চাইলে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামও কোন জোটের কথা অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘এনসিপি নির্বাচন কেন্দ্রিক কোনো রাজনৈতিক জোটের কথা ভাবছে না। এনসিপির এখনকার অ্যাজেন্ডা হচ্ছে আওয়ামী লীগের বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন। এই বিষয়গুলো আমরা সামনে আনতে চাই, জনগনের কাছে যেতে চাই। আমাদের দল এবং বক্তব্যকে জনগনের কাছে পরিচিতি করানোই এখন মুখ্য।

তাহলে অন্য দলের সঙ্গে বৈঠক কী কারণে, এমন প্রশ্নে অনেকটা বিএনপির মতোই কৌশল দেখা যাচ্ছে এনসিপিতেও। অর্থাৎ দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে এনসিপি তাদের দাবির সমর্থনে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, ‘নির্বাচনের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলোও যেন সামনে আসে আমরা সেটা চাই। সংস্কার এবং গণপিরষদ নির্বাচন নিয়ে এবং ফ্যাসিবাদি শক্তি আওয়ামী লীগের বিচারের প্রশ্নে আমরা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে চাই।