সন্ধ্যায় মেসেজ এলেই আঁতকে ওঠেন ইডিসিএলের কর্মীরা

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ছাঁটাই আতঙ্কে সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) কর্মীরা। সন্ধ্যা হলেই সংস্থাটির কিছু কর্মীর মোবাইলে মেসেজ আসে অস্বাভাবিক লেনদেনের। না, এটি খুশির খবর নয়। চাকরিচ্যুত করার মেসেজ। পাওনাদি ব্যাংকে দিয়ে পরে ডাকে টারমিনেশন লেটার পাঠিয়ে দেয় স্বায়ত্তশাসিত কোম্পানিটি।
এভাবে গত মাসে প্রায় ৪শ কর্মী ছাঁটাই করেছে ইডিসিএল। প্রয়োজনের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি জনবল থাকায় এমন ছাঁটাই কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীলরা। ফলে প্রায় তিন হাজারের বেশি কর্মীই এখন আতঙ্কে।
১৯৮৩ সালে এসেনসিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) প্রতিষ্ঠা করে সরকার। ঢাকায় প্রধান কারখানা ছাড়াও খুলনা, বগুড়া, গোপালগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে এসেনসিয়াল ড্রাগসের প্ল্যান্ট রয়েছে। উৎপাদন ক্ষমতা অনুযায়ী কোম্পানির জনবল দরকার সর্বোচ্চ আড়াই হাজার। কিন্তু সেখানে কাজ করেন পাঁচ হাজার ৬শ মানুষ। তিন হাজারের বেশি বাড়তি লোক কাজ করে প্রতিষ্ঠানটিতে।
মূলহোতা সাবেক এমডি
এই অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের মূলহোতা সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এহসানুল কবির। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক ২০১৪ সালে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) এমডি হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাচিপের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক। তার হাত ধরেই আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তিন হাজারের বেশি বাড়তি লোক নিয়োগ দেওয়া হয়।
১০ তারিখ টাকার মেসেজ দিয়ে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এরপর আর অফিসে যেতে দিচ্ছে না। পোস্ট অফিসের মাধ্যমে টারমিনেশন লেটার পেয়েছি। সেখানে একটা ধারা উল্লেখ করে লিখেছে, অতিরিক্ত জনবলের কারণে কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে।- প্রতিষ্ঠানটির সহকারী মার্কেটিং অফিসার রায়হান
সাবেক এমডি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা বা অনৈতিক প্রক্রিয়ায় নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন না তুলে অতিরিক্ত জনবল দেখিয়ে গত এপ্রিল মাসের ১০ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত বগুড়া, খুলনা, গোপালগঞ্জ ও ঢাকা অফিস থেকে ৪শ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বগুড়া প্ল্যান্টে ১০ এপ্রিল অফিস ছুটির পর পুলিশ ডেকে এনে ৫৪ জনকে চাকরিচ্যুতির নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়।