হোটেলে নিয়ে যৌন নির্যাতন করায় আ.লীগ নেতাকে খুন করেন যুবক
প্রথম নিউজ, কক্সবাজার : নিজের ওপর যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতেই আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনকে হত্যা করেছেন অভিযুক্ত যুবক আশরাফুল ইসলাম (২০)। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম।
সোমবার (২১ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে টেকনাফ হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির চেকপোস্টের সামনে পালকি নামে একটি বাস থেকে হত্যার অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলামকে আটক করা হয়। তিনি কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাহাড়তলী ইসলামপুর এলাকার মোহাম্মদ হাশেম মাঝির ছেলে। তিনি ওই এলাকার ওয়ামি একাডেমি নামে একটি মাদ্রাসার ছাত্র।
নিহত সাইফুদ্দিন কক্সবাজার শহরের ঘোনারপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত আনসার কমান্ডার আবুল বশরের ছেলে। তিনি কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। তিনি কাদেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিও।
এর আগে সোমবার (২১ আগস্ট) সকালে কক্সবাজার শহরের হলিডে মোড়সংলগ্ন আবাসিক হোটেল সানমুনের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষ থেকে দুই হাত বাঁধা অবস্থায় আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রোববার (২০ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সাদা পাঞ্জাবি ও মাস্ক পরিহিত এক যুবককে সঙ্গে নিয়ে হোটেলটিতে গিয়েছিলেন সাইফুদ্দিন। রাত ৮টা ১০ মিনিটের পর ওই যুবক চলে যান। হোটেলটির সিসিটিভি ফুটেজে বিষয়টি দেখা গেছে । এরপরই সংশ্লিষ্টরা যুবকের পরিচয় জানতে উদগ্রীব হয়ে পড়েন। তাকে শনাক্ত করতে জোর তৎপরতা শুরু করে পুলিশও। পরে তাকে আটক করা হয়।
নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম
পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনের সঙ্গে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে পরিচয় হয় আশরাফুল ইসলামের। সেই পরিচয় আরও ঘনিষ্ঠ করে রোববার বিকেলে বড় বাজার থেকে দেশীয় মদ ও পেয়ারা কিনে হলিডে মোড়ের হোটেল সানমুনের ২০৮ নম্বর কক্ষে ওঠেন তারা। সেখানে দেশীয় মদ ও পেয়ারা খাইয়ে মাদ্রাসাছাত্র আশরাফুলকে একপর্যায়ে যৌন নির্যাতন করেন সাইফুদ্দিন। যৌন নির্যাতন করে সাইফুদ্দিন সেই ভিডিও ধারণ করেন নিজের মোবাইলে। পরে মোটরসাইকেলে করে তাকে গোলদিঘির পাড়ে নামিয়ে ১০০ টাকা দিয়ে চলে যেতে বলেন।
এর এক ঘণ্টা পর আবারও ফোন করে হোটেলে ডাকেন সাইফুদ্দিন। সেখানে আবারও চেষ্টা করা হয় যৌন নির্যাতনের। তখন একপর্যায়ে নিজের ওপর যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনকে প্রথমে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে তারপর ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন আশরাফুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় টেকনাফের হোয়াইক্যং থেকে আশরাফুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। এমন ঘটনা যেন সমাজে আর না ঘটে- এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।