সিসি ক্যামেরা অকেজো সন্দেহের তীর কর্মকর্তা ঠিকাদার সিন্ডিকেটে
১৭টি নথি গায়েবের ঘটনায় ৬ কর্মচারীকে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ
প্রথম নিউজ, ঢাকা: গত দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ক্রয় ও সংগ্রহ-শাখার সামনের সিসি টিভি ক্যামেরা নষ্ট অবস্থায় পড়ে আছে। একটি সংরক্ষিত এলাকায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কেন আগে থেকেই সজাগ ছিলেন না সেটা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ শাখা থেকে ১৭টি নথি গায়েবের ঘটনায় ৬ কর্মচারীকে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি’র কর্মকর্তারা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছেন, নথি গায়েবের সঙ্গে ওই অফিসের কর্মীদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আপাতত নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা কেন, কার জন্য এই ফাইল গায়েব করেছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু সূত্র পাওয়া গেছে। মন্ত্রণালয়ের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী সিন্ডিকেট ও বাইরের সুবিধাভোগী ঠিকাদার সিন্ডিকেট এই কাণ্ডে জড়িত রয়েছে এটি অনেকটা নিশ্চিত। এই সিন্ডিকেটে কারা জড়িত তাদের সুনির্দিষ্ট করতে ৬ কর্মচারীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
সিআইডি’র একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিসি ক্যামেরা না থাকায় তদন্তে অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে। আটক ৬ জনের বাইরে তদন্তের স্বার্থে আরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। সিআইডি কার্যালয়ে আনা কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আরও একাধিক ব্যক্তিকে ইতিমধ্যে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
সিআইডি’র একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিসি ক্যামেরা না থাকায় তদন্তে অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে। আটক ৬ জনের বাইরে তদন্তের স্বার্থে আরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। সিআইডি কার্যালয়ে আনা কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আরও একাধিক ব্যক্তিকে ইতিমধ্যে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের তিন নম্বর ভবনের নিচতলার ২৪ নম্বর কক্ষের একাধিক আলামত সংগ্রহ করেছে সিআইডির ক্রাইম সিন। মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) গত রোববার মন্ত্রণালয় থেকে জোসেফ সরদার, আয়েশা সিদ্দিকা, মিন্টু, বাদল, বারী ও ফয়সালকে তাদের কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তাদের মধ্যে জোসেফ সরদার ও আয়েশা সিদ্দিকা কম্পিউটার অপারেটর এবং অন্য চারজন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। কম্পিউটার অপারেটর মো. জোসেফ সরদার ও আয়েশা সিদ্দিকা নামের দুই কর্মচারীর কক্ষেই ফাইলগুলো ছিল। এত গুরুত্বপূর্ণ ফাইল কেন অরক্ষিতভাবে রাখা হয়েছিল সেটা নিয়েও দেখা দিয়েছে নতুন প্রশ্ন। হারানো নথি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত হারানো নথিগুলো হাতে আসেনি। নথিগুলো পেলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, একাধিক সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়বিক্রয় সংক্রান্ত নথিসহ একাধিক প্রকল্পের নথি খোয়া গেছে। এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখন পর্যন্ত তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখায়নি সিআইডি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান বলেন, তদন্তের স্বার্থে এবং প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটনে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের ছয় কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইতিমধ্যে সিআইডি কার্যালয়ে আনা হয়। তাদের কাউকে আটক করা হয়নি। বরং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে কি কি তথ্য পাওয়া গেছে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু এখনো জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: