সাংস্কৃতিক সংস্কার কমিশন করা খুবই প্রয়োজন

 সাংস্কৃতিক সংস্কার কমিশন করা খুবই প্রয়োজন

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : নৃত্যশিল্পী ও পরিচালক লুবনা মারিয়াম। তার শিল্পনির্দেশনায় মঞ্চে আসছে নতুন নৃত্যনাট্য ‘দিলনাওয়াজ’। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে সম্প্রতি বেরিয়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ চারটি বই।

লুবনা মারিয়াম: বছর দুয়েক আগে একবার পাহাড়পুরে গিয়েছিলাম। এত সুন্দর জায়গাটা! সত্যিই আশ্চর্য করে দেওয়ার মতো স্থাপনা ছিল ওখানে। আমার সামনে একটি বাস এলো, সেটা থেকে নামলো ৫০-৬০ জন জাপানি। ওটা ছিল একটা বুদ্ধিস্ট ট্যুরিজম, ওরা এয়ারপোর্ট থেকে সোজা পাহাড়পুরে গেছে। মানে, ওরা ঘুরে বেড়াচ্ছে যেখানে ইচ্ছা। তাদের পকেটভর্তি টাকা, ডলার, ইয়েন কতকিছু, তাই না? কী পাওয়া যায় ওখানে? পাঁচ টাকার সিঙ্গারা, ১০ টাকার কোক। একটা পোস্টকার্ড, একটা বই, একটা পোস্টার। বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা যাতে কিছু নিয়ে যেতে পারে, সে কারণে ইংরেজিতে লেখা। আমরা সাংস্কৃতিকভাবে কতটা সমৃদ্ধ সেটা ওই বইগুলো পড়লে ওরা জানতে পারবে।

লুবনা মারিয়াম: বছরখানেক আগে আমি কম্বোডিয়া গিয়েছিলাম। অ্যাংকোর থমের ওখানে যে শৈল্পিক স্যুভেনিরগুলো পাওয়া যায়, এক একটা এক হাজার, দুই হাজার ডলার। অথচ আমাদের শিল্পীরা, মৃৎশিল্পীরা, যারা পাহাড়পুরের আশপাশে থাকেন, তারা পাহাড়পুরের গায়ে লাগানো নিখুঁত মাটির ফলকের মতো কাজগুলো এখনো হুবহু বানাতে পারে। কিছুদিন আগে জয়পুরে গেলাম। দেখলাম কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হচ্ছে তাদের বানানো সিরামিক টাইলস্। টাইলস্ দিয়ে তারা ফুলের টব বানাচ্ছে, টাইলস্ দিয়ে সুন্দর দেয়ালসজ্জার জিনিস বানাচ্ছে। আমাদের কি ক্রিয়েটিভিটির অভাব? নাকি আমরা… আমার সবসময় মনে হয় যে, আমরা নিজেদের জিনিস নিয়ে গর্ববোধ করতে ভুলে গেছি।

এই যে এত সুন্দর একটা জায়গা পাহাড়পুর, পাহাড়পুরের দেখাদেখি অ্যাংকোর ওয়াট তৈরি হয়েছে। ১৮৯০ সালের দিকে একজন ব্রিটিশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এসেছিলেন এখানে। হঠাৎ করে সমতলের মধ্যে একটা পাহাড় জঙ্গল হয়ে আছে! ব্যাপারটা দেখে তো তার খুব অদ্ভুত লেগেছে। তিনি ভাবলেন, এটা তো হতে পারে না! তার মানে হয়তো এখানে কিছু একটা আছে। বলা হয় যে, ১৭০০ সালের দিক থেকে পাহাড়পুরের অবনতি হতে শুরু করে, ক্ষতি শুরু হয়। তো তার মানে অন্তত দুই-তিনশ বছর। আমরা কত সরল! দুই-তিনশ বছর কোটি কোটি টাকা পড়ে ছিলে ওখানে। কারও মনেও হয়নি খুঁড়ে দেখি কী আছে। লোভও নেই মানুষের, তাই না? অন্য কোনো দেশ হলে … ইজিপ্টে তো আমরা শুনেছি যে পিরামিডের ভেতর থেকে সবকিছু নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। আমাদের মানুষেরা সরল অনেক। পাহাড়পুর বিহারটা কেউ খনন করেনি, গ্রামের লোক একটা কিছু চুরি পর্যন্ত করেনি, তাই না? তারপর শেষপর্যন্ত যখন সবটা পাওয়া গেল, বিশেষ করে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার পর ওখানে নৃতাত্ত্বিক খনন হলো। কী পাওয়া গেল? অদ্ভুত সুন্দর! অদ্ভুত সুন্দর

আমি তোমাকে আগেও বলেছি স্টেলা ক্রামরিশের কথা। তিনি বলেছেন, এখানে ভারতীয় শিল্পীর মনটা ফুটে ওঠে। এখানে ওরা কিন্তু দেবদেবীর প্রতিকৃতি করেনি। হয়তো কোনো গ্রামীণ গল্প বা ফোক টেলস্ থেকে একটার পর একটা গল্প সাজিয়েছে। তারপর রামায়নের এত সুন্দর যে ফলকগুলো! কিন্তু আমার যেটা খারাপ লাগলো, আশপাশে যে মৃৎশিল্পীরা আছেন, তারা দুটাকার চায়ের খুঁড়ি বানাচ্ছেন। কিন্তু তাদের দিয়ে কেন আমরা … তারা যেটা পারেন… ইকোনোমিক বেনিফিটের জন্যও তো কাজে লাগানো যেত তাদের।

জাগো নিউজ: আপনার বইয়ের ছবিগুলো ঐতিহ্যস্থানের মানুষেরা দেখলেই চিনে ফেলবেন, ইংরেজি বুঝলে পড়তেও পারবেন। তবে যারা শহরে বাস করেন, তারা বিস্মিত হবেন যে, আমাদের গ্রাম-বাংলায় এ কি সম্পদ পড়ে আছে! তাই না?

লুবনা মারিয়াম: তুমি তো ‘শাওনে ডালা’ দেখতে গিয়েছিলে। ‘শাওনে ডালা’, যেটা শ্রাবণ সংক্রান্তি, দিনভর বেহুলার ভাসান হয় নদীতে। পৃথিবীর অন্য কোনো জায়গায় এ রকম ঐতিহ্য থাকলে তারা এটাকে মাথায় তুলে রাখতো। শুধু একটা নৌকা না, ৫-৬টা করে নৌকা বেরোচ্ছে, আশপাশের নদীতে। ফটিকজানিতে বের হচ্ছে, এলেঙ্গাতে বের হচ্ছে। তিন-চারদিন ধরে একটা নদীমাতৃক উৎসব চলে সেখানে। আমরা কেন জানি না এ সম্পর্কে? কেন এটা নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি না? আমি যতবার যাই, আমার একদম কান্না পায় যে, আমাদের পর্যটন মন্ত্রণালয় কী করছে! চীনে গিয়ে দেখি পুরুষ মানুষ নারীর রূপ ধরে নাটক করছে, দেখে আমরা বলি আহা। আমাদের এখানে তো ছুঁকরির নাচ অহরহ হচ্ছে। ওই যে মনির, যে বেহুলার ভাসান করে, তারা যখন মনসা-বেহুলা করে, বোঝাই যায় না এরা পুরুষ। এরা কিন্তু সমকামী না। এটা লোকনাট্যের একটা আঙ্গিক যে, পুরুষ মানুষ নারীরূপে নাটক করছে। তারপর আমাদের আছে রাশমেলা। একেবারে বঙ্গপোসাগরের ওপরে তিনদিন ধরে মেলা হয়। এ রকম আসর কোথাও দেখা যায় না। আর লাঠিখেলা তো আছেই, প্রতিটা গ্রামে গ্রামে। এসব নিয়েই আমার ওই চার বই।

লুবনা মারিয়াম: আমার ইচ্ছা আছে, অন্তত আরো ১২টা, মানে মোট ১৬টা বই করার ইচ্ছা। এখানে আমাদের নৃতাত্ত্বিক বৈচিত্র দেখ— হাজং, মনিপুরি, চাকমা, মারকা, সাঁওতাল আছে। প্রত্যেকে আলাদা। কোনো দেশে এ রকম নেই। এতটুকু একটা দেশে এত বৈচিত্র, আর সেটা সংরক্ষণ কে করেছে? সম্প্রদায় নিজে। আমাদের সরকার, বড় বড় করপোরেট হাউজ, কেউ না। এই ৪০০-৫০০ বছর ধরে ওরা নিজেদের উদ্যোগে, নিজেদের অর্থায়নে করেই চলেছেন, করেই চলেছেন, তাই না? কিন্তু আসলে ব্রিটিশরা কী করেছিলেন? এই যে ব্রিটিশ প্রশিক্ষণব্যবস্থা, এটা মাটি থেকে আমাদের দূরে সরিয়ে দিয়েছে। আমরা কিছু জানি না, তাই না? শহরে বসে কেউ কিছু জানে না। এই যে শহর, তাদের প্রচেষ্টা একটা শ্রেণির মানুষ তৈরি করা, শিক্ষিত মানুষ, ওদের ধাঁচের শিক্ষিত, যারা নিজের দেশ সম্বন্ধে কিছুই জানে না।

লুবনা মারিয়াম: আমারা জাতীয় জাদুঘরের সাথে ‘আনন্দ বৈভব: উৎসবের বাংলাদেশ’ নামে একটা অনুষ্ঠান করলাম। আট প্রশাসনিক বিভাগের আটটা উৎসব বাছাই করেছি আমরা। কিছু নৃতাত্ত্বিক বৈচিত্রের কারণে, কিছুটা হলো নৌকাবাইচ, হাজংদের, সাঁওতালদের, মনিপুরিদের, আর আমাদের এই শাওনের ডালা। শাওনের ডালাতে আরেকটা মজা, এটা একটা কৃত্য। মুসলমানরা মনসার কাছে মানত করে, সত্যিই এটা অদ্ভুত সুন্দর একটা ব্যাপার।

লুবনা মারিয়াম: পরামর্শটা হলো, এই তথ্যগুলো সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। এখন আমরা শুনছি কোটি কোটি টাকা দেশ থেকে পার হয়ে গেছে। ইশ! তার মধ্যে থেকে সামান্য কটা টাকা যদি সম্প্রদায়গুলো পেত! এত সহজে… তথ্যচিত্রে দেখলাম, কে যেন পাঁচশ পাউন্ড দিয়ে জুতো পরেছে। এ ধরনের টাকাওয়ালা যদি একজন হাজং বা মনিপুরি কাউকে দিতো তাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য। মানে, এটা বোঝা যাচ্ছে যে, টাকা আছে। কিন্তু দেওয়ার মতো মানসিকতা নেই, সদিচ্ছা নেই।

জাগো নিউজ: সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা একজন চলচ্চিত্রকার। আপনি কি মনে করেন তাকে আমাদের এই মেসেজগুলো দেওয়া উচিত?

লুবনা মারিয়াম: আমরা আট বিভাগ নিয়ে যে কাজটা করছি, তার একটা ছিল খুলনার রাশমেলা। সেটা দেখছে ভাবনগর ফাউন্ডেশন, সাইমন জাকারিয়া। সংস্কৃতিবিষয়ক উপেদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সহায়তা করেছেন। প্রশাসন আমাদের সহায়তা করতে চাইছিল না। বরং প্রশ্ন তুলছিল, কেন চাচ্ছেন, কী চাচ্ছেন, কী উদ্দেশ্য। কিন্তু ফারুকী সরাসরি সাইমনকে ফোন করেছেন। আমার কাছে যেটা মনে হয় যে, এই সরকার নিয়ে আমাদের সবার মনে দ্বিধা আছে, কিছুটা ভয়ও আছে। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে বলছি, আমার মনে হয় তাদের সদিচ্ছা আছে। ফারুকী যেভাবে রাশমেলার ব্যাপারে সাইমনকে সহায়তা করলেন, আমার সেটাই মনে হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বক্তব্য শুনেও মনে হচ্ছে তাদের সদিচ্ছা আছে। এখন দেখার বিষয় তারা কতটা সফল হন।

জাগো নিউজ: আপনারা সফলভাবে একটা আন্তর্জাতিক নৃত্য উৎসব করলেন। কত দেশ থেকে শিল্পী, দর্শক এলো। সেটা কি আবারও করবেন?

লুবনা মারিয়াম: এত করে চেয়েছিলাম যে উৎসবটা বছর বছর হোক। কিন্তু পর্যটন বিভাগকে বোঝাতেই পারলাম না। সেবার ১৭টা দেশ থেকে নৃত্যশিল্পীরা নিজের টাকায় এসেছেন, নিজের টাকায় তারা হোটেলে থেকেছেন। একটা পথ দেখাতে চেয়েছিলাম দেশকে। দেখি চেষ্টা করবো আবার করতে। নিজেদের ট্যাকের পয়সা খরচ করে পথ দেখাতে চেয়েছিলাম যে, তোমরা করো। পর্যটন করপোরেশন…

লুবনা মারিয়াম: না, এখনো যোগাযোগ হয়নি। আমরা সবে ‘অানন্দ বৈভব’ আয়োজনটা করলাম। এটা অন্তত দুবছর চলবে। এসব উৎসব করা সম্প্রদায়কে কীভাবে ক্ষমতায়িত করা যায়, সেগুলো নিয়ে চিন্তা করছি আমরা। এখন একটা মজার কথা হলো, আমরা যেটা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজি গোলের কথা বলি, সেখানে কিন্তু সংস্কৃতি একটা স্ট্যান্ড-অ্যালোন গোল নয়। কিন্তু এখন সারা পৃথিবী বলছে যে, সংস্কৃতি নিশ্চয়ই একটা স্ট্যান্ড-অ্যালোন লক্ষ্য হওয়া উচিত। কারণ সংস্কৃতি তো প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে শুধু এনেবলার/অথর ড্রাইভার, তো সেই কথা চিন্তা করে সাংস্কৃতিক খাতে আমি বলবো যে, এত কম আমাদের বাজেট। বাজেটটা যতি কিছু বাড়ানো যায় তাহলে কত কাজ করা যায়। জিডিপির বোধহয় পয়েন্ট জিরো জিরো জিরো … কত পার্সেন্ট সংস্কৃতির বাজেট।

লুবনা মারিয়াম: এখানে অনেক মানুষ আছেন, যারা চিন্তা-ভাবনা করেন। তাদের ডেকে আনলেই হবে বলে আমি মনে করি। মনজুর ভাই আছেন, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আছেন, ড. নিয়াজ জামান, সোনিয়া আমিন আছেন। কেন বলছি সাংস্কৃতিক সংস্কারের কথা? আমাদের না সবকিছু কেমন গুলিয়ে গেছে। ধর্ম করবো, তাতেও একদম গোড়ামি। আমি ইদানিং পাকিস্তানি নাটক দেখি খুব, ইউটিউবে। ওখানে ছেলে-মেয়েরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছে। কিন্তু যেই না নামাজ শেষ হয়ে গেল, একদম ফিটফাট, একদম আধুনিক সাজে। তো ধর্ম হলো আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস, সেটার মধ্যে গোড়ামি আনার তো প্রয়োজন নেই। কীসে বিশ্বাস করবো, কী করলে পরিবারের, মানবতার মঙ্গল হবে সেগুলো আমরা চিন্তাই করি না। অন্ধবিশ্বাস আমাদের। এই যে হাতমোজা, পা-মোজা, শুধু চোখ দেখা যাচ্ছে, এটা তো ধর্ম নয়। তো আসলে এটা একদম গুলিয়ে গেছে আমাদের।

লুবনা মারিয়াম: হবে না, কিন্তু চেষ্টা তো করতে হবে, তাই না? ছেলেমেয়েদের সাথে কথা বলতে হবে। আমরা অনেকগুলো জায়গায় নারীবাদী নাটক, নৃত্য কর্মশালা করেছি। একেকটি গ্রামে, ছোট ছোট মফস্বলে যখন গেছি, ছেলেমেয়েরা কিন্তু কেউ কারো সাথে কথা বলছে না। আলাদা আলাদা বসছে। এরা তো ছোট ছেলেমেয়ে, ক্লাস সিক্স থেকে ক্লা

লুবনা মারিয়াম: আমরা চিন্তাভাবনা করতে ভুলে গেছি। পড়াশোনা করতে ভুলে গেছি। সবকিছু কুইক পেতে চাই। কোচিং করে এ প্লাস পেতে চাই, সে রকম কোচিং করে ধর্ম করি আমরা, বুঝে করি না। ধর্মীয় বক্তাদের আমরা আলেম বলে ভুল করছি না তো? ধর্ম নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন এ রকম যদি কেউ থাকেন, ঘরের মধ্যে বসে আছেন।

জাগো নিউজ: আপনি কী রকম আলেমের কথা বলছেন একটু উদাহরণ দিয়ে বলবেন কি?

লুবনা মারিয়াম: আমার নানী উর্দু লেখিকা ছিলেন, কলকাতায়। রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে অর্গান বাজিয়ে চণ্ডিদাস, বিদ্যাপতির গান করতেন। তিনি সুফি ছিলেন, চিল্লা করতেন। ২০-২৫ দিন কারো সাথে দেখা না করে, একা মুরাকাবা করতেন। ধর্ম নিয়ে তারা চিন্তা করেছেন। তার নাম রাহাত আরা বেগম। উর্দু ভাষায় তার লেখা বই ইংরেজিতে ছাপা হয়েছে সম্প্রতি। এরা হলো সত্যিকার অর্থে ধার্মিক আর চিন্তা করেছেন ধর্ম নিয়ে। আমরা হাতমোজা, পা-মোজা এসব তো দেখি, কিন্তু কোথাও কি কাউকে দেখি ধ্যানস্থ হয়ে একটু ধর্মচিন্তা করছে? দেখি না তো। এ জন্য বলছি, সাংস্কৃতিক সংস্কারের কথা। পাকিস্তানি টিভি দেখি, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছে ছেলেমেয়েরা। কিন্তু তাদের মধ্যে কোন গোড়ামি নেই। ক্রিকেট খেলছে, মডেলিং করছে, কেউ কেউ আর্কিটেক্ট হচ্ছে। কিন্তু আমাদের মধ্যে দেখবে, যে হাতমোজা, পা-মোজা পরেছে, সে হয়তো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও পড়ে না।

লুবনা মারিয়াম: এখন আবার আস্তে আস্তে কাজ পাচ্ছে। অনুষ্ঠান হচ্ছে। আর আমরা নিজেরাও চিন্তা করেছি… আমাকে তো রোজি আপা (নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান) একটা দায়িত্ব দিয়েছেন, নৃত্যশিল্পী ফাউন্ডেশন থেকে আমরা স্কুলে স্কুলে সাংস্কৃতিক কর্মশালা চালাবো। আরেকটা হলো, প্রতি মাসে দেশের কোথাও না কোথাও একটা অনুষ্ঠান করবো, নিজেরাই, নিজেদের উদ্যোগে। নিজেরা টিকেট সেল করে সেখান থেকে যা টাকা ওঠে। কিন্তু আমার ধারনা, অনুষ্ঠান আবারও আরম্ভ হবে। করপোরেট শো হচ্ছে।

লুবনা মারিয়াম: ওটা তো ভালোবাসার কাহিনি, ভালোবাসা দিবসে শিল্পকলা একাডেমির মেইন স্টেজে মঞ্চস্থ হবে। নৃত্য পরিচালনা করছে সাব্বির আহমেদ খান।