লাভের মুখ দেখছে না চ্যাটজিপিটি, দেউলিয়ার পথে কোম্পানি: রিপোর্ট
প্রথম নিউজ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লাভের মুখ দেখছে না চ্যাটজিপিটির নির্মাতা ওপেনএআই। শুরুতে ঝড় তুললেও ক্রমাগত কমছে তাদের গ্রাহক। ফলে মুনাফাও কমছে হু হু করে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ২০২৪ সালেই দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে আলোচিত এআই স্টুডিওটি। সম্প্রতি অ্যানালিটিকস ইন্ডিয়া ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি পরিচালনার জন্য ওপেনএআই’র দৈনিক খরচ হচ্ছে প্রায় সাত লাখ মার্কিন ডলার (৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার বেশি)। ফলে দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে তাদের অর্থভাণ্ডার। জিপিটি৩.৫ এবং জিপিটি৪’কে মনিটাইজ করার চেষ্টা সত্ত্বেও এই মুহূর্তে যথেষ্ট লাভ করতে পারছে না সংস্থাটি।
২০২২ সালের নভেম্বরে চালু হওয়ার পরপরই ব্যাপক আলোচনায় উঠে আসে চ্যাটজিপিটি। গ্রাহকের সংখ্যায় ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অ্যাপ হিসেবে নাম লেখায় সেটি। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ের রেকর্ডভাঙা ঝড় থেমে যেতে সময় লাগেনি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ধারাবাহিকভাবে কমছে চ্যাটজিপিটির গ্রাহক।
সিমিলারওয়েব নামে একটি সংস্থার তথ্য বলছে, গত জুনে চ্যাটজিপিটির গ্রাহক ছিল ১৭০ কোটি। কিন্তু জুলাই মাসে তা প্রায় ১২ শতাংশ কমে ১৫০ কোটিতে নেমে এসেছে। সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সংস্থাটির অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেসও (এপিআই)। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশ কয়েকটি কোম্পানি আগেই তাদের কর্মীদের চ্যাটজিপিটি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করেছিল। এখন তারা ওপেনএআইর এপিআই অ্যাক্সেস নিয়ে বিভিন্ন কাজের জন্য নিজস্ব এআই চ্যাটবট তৈরি করে নিচ্ছে।
অ্যানালিটিকস ইন্ডিয়া ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে এই সমস্যার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, বর্তমানে বেশ কয়েকটি ওপেন-সোর্স এলএলএম (লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল) রয়েছে, যা বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় এবং লাইসেন্সিং সমস্যা ছাড়াই পুনঃব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। ফলস্বরূপ, গ্রাহকরা ইচ্ছামতো কাস্টমাইজ করে উপাদানটিকে নিজেদের কাজের উপযোগী করে তুলতে পারছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওপেনএআই আজও লাভজনক অবস্থায় পৌঁছাতে পারেনি। চ্যাটজিপিটি তৈরির সময়ের তুলনায় গত মে মাসে সংস্থাটির লোকসান দ্বিগুণ বেড়ে ৫৪ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছিল। মাইক্রোসফটের এক হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগই এখন পর্যন্ত টিকিয়ে রেখেছে ওপেনএআই’কে।
অবশ্য চ্যাটজিপিটি নির্মাতাদের দাবি, ২০২৩ সালে তাদের বার্ষিক আয় ২০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে এবং ২০২৪ সালে তা ১০০ কোটিতে পৌঁছাবে। যদিও এই আশাকে অনেকটা দূরাশা বলেই মনে হচ্ছে। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে সংস্থাটির লোকসানের পরিমাণই কেবল বাড়ছে।