মাছ-মাংসের দাম চড়া, সবজি কমতির দিকে
গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় দামও কমতির দিকে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: রাজধানীর বাজারে নিত্যপণ্য মাছ-মাংস, পিয়াজ, আটা ও চিনির দাম বেড়েছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় দামও কমতির দিকে। কমেছে আলুর দাম। গতকাল রাজধানীর কাওরানবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। মাংসের বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা। গরুর কলিজাও বিক্রি হচ্ছে একই দামে। তবে, খাসি মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি দরে, কলিজাও বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংসের দামে। মাংস বিক্রেতা হোসেন মিয়া বলেন, মানুষের হাতে এখন টাকা পয়সা কম, যে কারণে আমাদের বেচাকেনাও কম। দাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরুর মাংসের দাম আমরা সব সময় যে দামে বিক্রি করি, গতকালও সেই দামে বিক্রি করি। তবে অনেকেই আছে শুক্রবারে সমান ৭০০ টাকা বিক্রি করে। খাসির মাংসের দাম গত এক মাসে কমেওনি, বাড়েওনি।
এদিকে শুক্রবার উপলক্ষে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৬০-১৭০ টাকা, তবে অন্যান্য দিনে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা করে বিক্রি হয়। এ ছাড়াও লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা কেজি দরে। আর পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকা কেজি, যা অন্যান্য দিনে বিক্রি হয় ২৭০ টাকা কেজি দরে। মুরগি ব্যবসায়ী সুজন বলেন, সাধারণত শুক্রবারে মুরগির দাম হাল্কা বাড়তি থাকে। আমাদের কিনেই আনতে হয় বেশি দামে। দামটা বাড়ে পাইকারি বাজারে, যে কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়ে। দাম বেশি থাকলে আমাদেরই বরং ক্ষতি, বিক্রিও কমে যায়। কম দাম থাকলে মানুষ কিনতে আসে বেশি। মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি মাছের বাজারেও কিছুটা উত্তাপ দেখা গেছে। বড় চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৫০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ টাকা, রুই মাছ ২৮০ টাকা, কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। এ ছাড়া বাজারে সাড়ে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ৫২০ টাকা, ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৭৫০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৮৫০ টাকা এবং ৯০০-৯৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে খোলা চিনি প্রতি কেজি পাওয়া যাচ্ছে ১২০ টাকায়। প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১২৫-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল চিনির কেজি ১৪০ টাকা। বাজারে খোলা আটার কেজি ৬৫ টাকা। কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা। প্যাকেটজাত আটা কেজিপ্রতি ৭২-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। দেশি মসুরের ডালের কেজি ১৩০-১৪০ টাকা। ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০-১২৫ টাকা। সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। পাঁচ লিটারের বোতল ৯২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে লবণের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকায়। এদিকে শীতের মৌসুমে সবজির দাম কিছুটা কমলেও বেশ কিছু সবজি চড়াদামে বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে মিলছে নানান ধরনের শীতের সবজি। আকারভেদে বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকায়। শসা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। বেগুন ৮০-৯০ টাকা ও টমেটো ১০০-১২০ টাকা। কাঁচামরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। এদিকে শিমের কেজি ৪০-৬০ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, লাউ প্রতিটি আকারভেদে ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৫০-৫৫ টাকা, পটোল ৬০, ঢেঁড়স ৬০, কচুর লতি ৭০-৮০, পেঁপে ৩০-৪০, বরবটি ৬০-৮০ টাকা কেজি। বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, যা ৭ দিন আগে ছিল ৬০ টাকা।
রামপুরা কাঁচাবাজারের ক্রেতা আপ্তাব উদ্দীন বলেন, সবজি ছাড়া বাজারে সব পণ্যের দাম এখনো চড়া। তবে সবজির দাম শুক্রবার ছাড়া অন্য কোনো দিন আরও কম থাকে। এদিকে, বাজারে চালের সংকট না থাকলেও বেড়েছে সুগন্ধি চালের দাম। যার প্রভাব পাইকারি ও খুচরা বাজারে পড়েছে। পাইকারি বাজারে সুগন্ধি চালের বস্তাপ্রতি ৫০০ টাকার বেশি বেড়েছে। তাই খুচরা বাজারেও দাম বেড়েছে। ভালোমানের খোলা সুগন্ধি চাল ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আগে যা বিক্রি হতো ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। সুগন্ধি চালের প্যাকেট ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইজাম চাল প্রতি কেজি ৫৮ টাকা, আটাশ চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৭৫ টাকা, হাসকি ২৯ প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মূল্যবৃদ্ধিতে পিছিয়ে নেই জিরা-এলাচসহ বেশিরভাগ মসলার দাম। ৪৫০ টাকা কেজির জিরা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫২০ টাকায়। এলাচি মানভেদে এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা কেজি ছিল, এখন এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা। সব কোম্পানির প্যাকেট লবণ কেজিতে চার টাকা বাড়িয়ে ৪২ টাকা করা হয়েছে। আগে ছিল ৩৮ টাকা।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews