বিএনপি ভাবাপন্ন বুদ্ধিজীবীদের পছন্দের ইসি হবে না: কামরুল
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীদের পছন্দ মতো নির্বাচন কমিশন হবে না, তবে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন হবে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। আজ শনিবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি এবং বিএনপি ভাবাপন্ন তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের পছন্দ মতো নির্বাচন কমিশন হবে না সেটা আমরা বুঝতে পারছি এখন থেকেই। কিন্তু জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন সার্চ কমিটি আমাদের উপহার দেবে। সেই নির্বাচন কমিশন আগামী দিনে যথা সময়ে নির্বাচনের আয়োজন করবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এর ব্যতিক্রম হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি মৃত ইস্যু। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশে আর কখনো প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিকে বিএনপি হত্যা করেছে। ওই ফাঁদে বাংলাদেশ আর পা দেবে না।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সার্চ কমিটি বসেছে। ৩ শতাধিক নামের তালিকা তাদের কাছে জমা হয়েছে। সংবিধান তাদের যে ক্ষমতা ও দায়িত্ব দিয়েছে সে অনুযায়ী তারা রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নামের তালিকা জমা দেবেন। অনেকে অনেক কথা বলেন, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বিএনপির সুরেই কথা বলেন। বিএনপি এবং বদিউল আলম মজুমদারের কথার মধ্যে আমি কোনো পার্থক্য খুঁজে পাই না। বলেছেন, ১০ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। কেন! এটা কি সার্চ কমিটির কার্যতালিকার মধ্যে পড়ে? পড়ে না। ১০ জনের নামের তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেবেন, তিনি সেখান থেকে ৫ জনকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।
তিনি আরও বলেন, এসব কথা বলে একটা বিশৃঙ্খলা-অচলবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা, জনমনে ধোঁয়াশা সৃষ্টির চেষ্টা তারা করছেন। জনমনে যেন সন্দেহ দানাবাঁধে সেই চেষ্টা তারা করছেন। তবে এতে ফল হবে না। বিএনপির সঙ্গে জনগণ নেই। যেসব বুদ্ধিজীবী বিএনপির সুরে কথা বলেন, তারাও জনগণের পালস জানেন না। জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। জনগণ আওয়ামী লীগকে বারবার ক্ষমতায় এনেছে। আগামী দিনেও আওয়ামী লীগের পক্ষে জনগণ থাকবে।
বিএনপির আস্থা মানে জনগণের আস্থা না। বিএনপির আস্থা অর্জন করা কস্মিনকালেও সম্ভব না। কারণ এরা সব সময় নেগেটিভ রাজনীতি করে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে এই দলটার জন্ম দিয়েছেন। রাজাকার-আল বদর, বিভিন্ন পাঁচমিশালী বদের একটা সংমিশ্রণ বিএনপি। তাদের কোনো আদর্শ নেই। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এবং অতি বামপন্থী, যারা মুক্তিযুদ্ধকে বলেছিল ২ কুকুরের লড়াই। অনুসন্ধান করে দেখুন বিএনপি নেতাদের পূর্ব পুরুষরা কে কোথায় ছিল। কেবলমাত্র মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরোধিতা করাই এদের কাজ। এদের অন্য কোনো কাজ নেই। উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা, দেশকে আবার পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়া, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা এবং ভালো কাজগুলো বিতর্কিত করা ছাড়া এদের কোনো কাজ নেই, বলেন কামরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক পন্থায় কোনো সময় তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না এটা তারা বোঝে। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছিল। সূক্ষ কারচুপির মাধ্যমে বিজয় লাভ করেছিল জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে। জনগণের ভোটে জয়লাভ করার সক্ষমতা তাদের নেই বলে তারা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপির অতীত যে কর্মকাণ্ড, ২০০১-০৬ পর্যন্ত যে নির্যাতন-নিপীড়ন, হত্যা, ধর্ষণ, সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, প্রগতিশীল নেতা-কর্মীদের নির্যাতন—৭১ এর মতো যে কর্মকাণ্ডগুলো করেছে, বিএনপির ফাঁদে বাংলাদেশের মানুষ আর পা দেবে না।
দেশের মানুষ উন্নয়ন চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতীতের অবস্থায় বাংলাদেশের মানুষ ফিরে যেতে চায় না। কাজেই বিএনপির ফাঁদে জনগণ কোনো অবস্থাতেই আর পা দেবে না। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচনে আসেনি। সাংবিধানিকভাবে যে রকম নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল তেমন হয়েছে। সংবিধানসম্মতভাবে আমরা নির্বাচিত হয়েছিলাম। ৫ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলাম, কিছুই করতে পারেননি। ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার নামে তামাশা করেছে তারা। আন্তরিকতার সঙ্গে নির্বাচন করেনি, বাণিজ্য করেছে। আন্তরিকতার সঙ্গে যদি নির্বাচনে আসতো তাহলে অবশ্যই সংসদে সম্মানজনক অবস্থানে আসতো।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: