ঠিক সময়ে আন্দোলনে ব্যর্থ হলে চড়া মূল্য দিতে হবে: বিএনপি
নির্যাতনের কারণে শেষ দিকে তরিকুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন
প্রথম নিউজ, ঢাকা: সঠিক সময়ে জনদাবি নিয়ে আন্দোলনে ব্যর্থ হলে চড়া মূল্য দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। আজ শনিবার দুপুরে কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য তরিকুল ইসলামের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় বিএনপির নেতারা এসব কথা বলেন। এ স্মরণসভার আয়োজন করে তরিকুল ইসলাম স্মৃতি সংসদ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় নিজেদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা শুরু করেন কর্মীরা। কর্মীদের শান্ত করার চেষ্টাও করেন ফখরুল। পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় বক্তৃতা বন্ধ করে ডায়াস ছেড়ে চলে যান তিনি। কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি শান্ত হলে তিনি আবারও বক্তৃতা শুরু করেন।
একই অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর বক্তব্য দেওয়ার সময়ও নিজেদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি করেন কর্মীরা। তখন শামসুজ্জামান দুদু কর্মীদের শান্ত করেন। অনুষ্ঠান শেষে গেট দিয়ে বের হওয়ার সময়ও ধাক্কাধাক্কি করেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা। এতে কাচের গেটের একটি অংশ ভেঙে যায়।
স্মরণসভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা একটি উদারপন্থি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করছি। তরিকুল ইসলাম জীবন দিয়ে সেই কাজ করে গেছেন। নির্যাতনের কারণে শেষ দিকে তরিকুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। বিশেষ করে এরশাদের নির্যাতনের কারণে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুখের কাছে তিনি পরাজিত হননি। শেষ পর্যন্ত তিনি লড়াই করেছেন কীভাবে বেঁচে থাকা যায়, কীভাবে জনগণের জন্য একটু কাজ করা যায়।
তিনি বলেন, অনেকেই বলে আমরা বুড়ো হয়ে গেছি, সত্য কথা। আমাদের বয়স হয়ে গেছে। কিন্তু আরও একটি সত্য রয়েছে— বৃদ্ধের মস্তিষ্ক থেকে যুবকদের স্পন্দনে দাও। সেই শক্ত হৃদয় স্পন্দন আমরা দেখতে চাই। সেই দৃঢ়, সাহসী, নতুন, নবীন নেতৃত্ব আমরা দেখতে চাই। তাদের পাশে নিয়ে নেতৃত্ব দিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ঠিক সময়ে জনদাবি নিয়ে আন্দোলনে ব্যর্থ হলে চড়া মূল্য দিতে হবে। তখন হয়তো বেগম খালেদা জিয়াকে জীবিত দেখতে পাবো না। এটা বুকের মধ্যে নেন। তরিকুল ইসলাম তো চলে গেছেন। আমাদের অনেকেই চলে যাবেন। সেই জন্য চাই কঠিন ঐক্য। চাই সম্মান, শ্রদ্ধা ভালোবাসা, যে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে ঐক্য গড়ে তুলবো এবং আন্দোলনকে রাস্তায় নিয়ে যাবো। আমি মনে করি, ছোট কর্মী থেকে বড় নেতা সবাইকেই প্রয়োজন। আসুন আমরা এ প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ হই, আমাদের নেতা তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে নেমে পড়বো।
তিনি বলেন, টাকা ছাড়া কিচ্ছু হবে না, দাঁড়াতে পারবো না- এটা আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে নিয়েছি। টাকা আর আন্দোলন একসঙ্গে হয় না। তরিকুল ইসলাম এটা বিশ্বাস করতেন এবং আন্দোলন করে দেখিয়ে দিয়েছেন। তার বিপরীতমুখী মানুষটাকেও কাছে বসিয়ে রাখতেন বন্ধুর মতো ব্যবহার করতেন। এর নামই তো ঐক্য।
দুদু বলেন, যে লোকটা আমার সঙ্গে আছে, তাকে সরিয়ে দেওয়ার চিন্তা করলে আন্দোলনটা হবে কীভাবে? আমরা নিজের ছায়াকে বিশ্বাস করি না। তাহলে আন্দোলনটা হবে কীভাবে? সবকিছু বাদ দিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে মুক্ত করার জন্য, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য ঐক্যের দরকার, আন্দোলনের দরকার।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম প্রমুখ।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: