পিকে হালদারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন পেছালো

 পিকে হালদারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন পেছালো

প্রথম নিউজ, পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি: বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে পিকে হালদার ওরফে প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছালো। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) পিকে হালদারসহ মোট ছয় আসামিকে ফের কলকাতার নগর দায়রা আদালতে তোলা হবে।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মামলাটি কলকাতা নগর দায়রা আদালতের স্পেশাল সিবিআই কোর্ট-৩ বিচারক শুভেন্দু সাহার এজলাসে উঠানো হয়। এদিন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু এই মামলার তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) পক্ষ থেকে আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি চাওয়া হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি শুনানি হয়ে যাওয়ার পর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।

এদিকে, এ মামলার একমাত্র নারী আসামি আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদার শারীরিক অসুস্থতার জন্য আদালতে একটি পিটিশন করা হয়। বিচারপতি এখন কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শর্মী হালদার মেডিক্যাল প্রতিবেদন চেয়েছেন। এছাড়া পিকে হালদারের ছোট ভাই প্রানেশ হালদারের জামিন আবেদন করা হয়েছে। এই আবেদনের শুনানির দিনও ২০ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়েছে।

শনিবার সকালে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে পিকে হালদারসহ শর্মী হালদারকে আনা হয়। কলকাতা পুলিশের প্রিজনভ্যান থেকে সোজা আদালতের লকআপে নিয়ে যাওয়া হয়। নগর দায়রা আদালতের স্পেশাল সিবিআই কোর্ট-৩ এর বিচারক শুভেন্দু সাহার এজলাসে পুরুষ অভিযুক্তদের কাঠগড়ায় তোলা হয়। বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের কথা শোনার পর বিচারক পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী বিশ্বজিৎ মান্না বলেন, নারী আসামি শর্মী হালদারের শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় বিচারক কারা কর্তৃপক্ষের কাছে মেডিক্যাল রিপোর্ট চেয়েছেন। পাশাপাশি প্রানেশ হালদারের জন্য জামিনের আবেদন করা হয়েছে । শনিবার পিকে হালদারসহ পাঁচজনের বিচার শুরু হওয়ার কথা ছিল কি না- প্রশ্নের উত্তরে আইনজীবী বিশ্বজিৎ মান্না জানান, আজ নিয়মিত আদালত ছিল না এছাড়া আজ কোনো সাক্ষী আসেননি। নিয়মিত আদালত সিধান্ত নেবে যে কোন তারিখে সাক্ষ্য নেওয়া হবে।

পিকে হালদারের মায়ের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাকে বাড়ি পাঠানোর জন্য আইনী প্রক্রিয়ার বিষয়ে বিশ্বজিৎ মান্না বলেন, পিকে হালদার মায়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ। তাই তাকে বৈদিক ভিলেজের বাড়িতে পাঠানোর জন্য আদালতে কাছে আবেদন করেছি।

অন্যদিকে, ইডির আইনজীবী অরজিৎ চক্রবর্তী জানান, আজ সাক্ষ্যগ্ৰহণ না হওয়ার কারণ হলো- আসামি প্রানেশ হালদারের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ও ইডির পক্ষ থেকে সেই জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি চাওয়া হয়।

অরিজিৎ চক্রবর্তী আরও জানান, এদিন পিকে হালদারের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কথা ছিল, কিন্তু আদালত তা মুলতবি ঘোষণা করেছেন। বর্তমানে পিটিশনগুলোর শুনানি হবে ২০ ফেব্রুয়ারি। শুনানি হয়ে যাওয়ার পর পর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে ও ওই দিনই আসামিদের হাজিরা দিতে হবে। এই মামলায় দুই বাংলার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম থাকার বিষয়ে ইডির আইনজীবী বলেন, এখন পর্যন্ত রেকর্ডে এ ধরনের কোনো তথ্য উঠে আসেনি।

২০২২ সালের ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের রাজারহাটের বৈদিক ভিলেজ, বোর্ড হাউস ১৫, গ্রিনটেক সিটি থেকে গ্রেফতার করা হয় পিকে হালদার ওরফে প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে শিবশঙ্কর হালদারকে। এরপর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে পিকে হালদারের আরও পাঁচ সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- পিকে হালদা ও তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার ও আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদার। গ্রেফতারের পর ২০২২ সালের ২১ মে অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন- ২০০২ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।