নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীকে যে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে চায় কমিশন
প্রথম নিউজ, অনলাইন : ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন আজ বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে যাচ্ছে। প্রতিবেদনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রধান আইন ‘দ্য রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার (আরপিও)’ বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ আইন ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ছাড়াও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সাংবিধানিক বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুপারিশ থাকবে বলে জানা গেছে।
এছাড়া দেশের প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ করা হলেও ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনের আগে আরপিও সংশোধন করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলো বা সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আরপিওর ৮৭ অনুচ্ছেদে এই বিধান যুক্ত করা হয় যে ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা-ই থাকুক না কেন, নির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্ব পালনকালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো সদস্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা না হয়েও নির্বাচনী অপরাধের জন্য কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবেন।
এর আগের নির্বাচনগুলোতে সেনাবাহিনী নিয়োগ করা হতো ১৮৯৮ সালের প্রণীত ফৌজদারি কর্যবিধির ১২৯ থেকে ১৩১ ধারায় এবং সেনা বিধিমালা ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায়।
আওয়ামী লীগ ও তাদের সমমনা দলগুলো ২০০১ সালের নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ভূমিকায় সন্তুষ্ট ছিল না। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে ওই সংসদে আরপিওতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞা থেকে প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলো বাদ দেওয়া হয়।
ফলে বিদ্যমান বিধান অনুসারে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা নির্বাচনী অপরাধের জন্য কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের ক্ষমতা নিয়ে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে পারলেও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা পারেন না।
আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের বাইরের দলগুলো এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা সশস্ত্র বাহিনীকে এই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। সে কারণে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন আরপিওর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় আবারও প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগগুলোকে সংযুক্ত করার সুপারিশ দিতে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।