নির্বাচনী পরিবেশ নিবিড়ভাবে মনিটরিং করছে যুক্তরাষ্ট্র, রাষ্ট্রদূতের কাজের প্রশংসা

সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে অব্যাহতভাবে যোগাযোগ রাখছে তারা।

নির্বাচনী পরিবেশ নিবিড়ভাবে মনিটরিং করছে যুক্তরাষ্ট্র, রাষ্ট্রদূতের কাজের প্রশংসা

প্রথম নিউজ, ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে-জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ নিবিড়ভাবে ও অব্যাহতভাবে মনিটরিং করছে যুক্তরাষ্ট্র। সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে অব্যাহতভাবে যোগাযোগ রাখছে তারা। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে তাদেরকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছে। একই সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে পারদর্শী রাষ্ট্রদূত হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে অবিশ্বাস্য রকম প্রতিভাবান দল রয়েছেন।

সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারি ও অন্য একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল সোমবার ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন। তিনি আবারও জানিয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্র কোনো দলের পক্ষে কাজ করছে না। বাংলাদেশে তাদের পছন্দের কোনো দল নেই। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় বিরোধী দলগুলোর চলমান আন্দোলন ও সহিংস ঘটনা নিয়ে। এসব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনী পরিবেশ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি আমরা।

বিশ্বাসযোগ্য গুরুতর সহিংস যেকোনো ঘটনাকে আমরা আমলে নিই। 
রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাস্তবেই কঠিন পরিস্থিতিতে আছেন বলে মন্তব্য করেন একজন সাংবাদিক। একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেয়া জাহেদুল ইসলাম ওরফে মিয়া আরেফি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় বেদান্ত প্যাটেলের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ঢাকায় আমাদের দূতাবাসে অবিশ্বাস্য একটি প্রতিভাবান টিম আছে। এর নেতৃত্বে আছেন অভিজ্ঞ একজন রাষ্ট্রদূত (পিটার হাস)। তিনি শুধু বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করতেই দক্ষ এমন নয়। একই সঙ্গে বিস্তৃত অঞ্চলের বিষয়েও দক্ষ। 

মুশফিকুল ফজল আনসারি প্রশ্ন করেন- বাংলাদেশজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করছেন। সরকার এক অর্থে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও প্রতিবাদ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, পদস্থ নেতাদেরকে সহ কমপক্ষে ৮০০০ মানুষকে আটক করেছে। ২৮শে অক্টোবর প্রতিবাদ বিক্ষোভের সময় থেকে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১ জন। ক্ষমতাসীনরা তাদের দলীয় নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের আগুনে ফেলতে অথবা তাদের হাত পুড়িয়ে দিতে। বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে একটি শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এমন পরিবেশ সৃষ্টিতে আপনারা কি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে থাকবেন এবং নতুন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবেন? মুশফিকের এ প্রশ্নের জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আপনি এর আগেই হয়তো এমন প্রশ্নের উত্তর শুনেছেন। সেটা হলো, বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না যুক্তরাষ্ট্র। আমরা এক রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাতী নই।  ঠিক এই মুহূর্তে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নিবদ্ধ আছে জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী পরিবেশ নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা। এ জন্য আমরা যথার্থভাবে সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সরকার এবং অন্য অংশীদারদের সঙ্গে অব্যাহতভাবে যোগাযোগ রাখছি। তাদেরকে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।