দিনকালের প্রকাশনা বন্ধে প্রমাণ হয় ক্ষীণ ভিন্নমতও সরকার সহ্য করে না
বিএফইউজে ও ডিইউজের বিক্ষোভ সমাবেশ
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : আইন মেনে সকল কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরও অন্যায়ভাবে জাতীয় দৈনিক দিনকালের ডিক্লেয়ারেশন বাতিলের প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন,সংবাদমাধ্যমের শত্রু ক্ষমতাসীন সরকার প্রমাণ করেছে তারা ভিন্নমত সহ্য করতে পারে না। দৈনিক দিনকাল পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে দিনকালের প্রকাশনা খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে শীর্ষ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আজ সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড প্রদক্ষিণ করে কদম ফোয়ারা মোড় হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজে'র সভাপতি এম আবদুল্লাহ। বক্তব্য রাখেন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও শওকত মাহমুদ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউ'র সভাপতি মোরসালিন নোমানী, বিএফইউজের সিনিয়র সহ সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজের সহ সভাপতি শাহীন হাসনাত, বাছির জামাল ও রাশেদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ প্রমুখ। সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন বিএনপির ভাইস চেযারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারি ও দৈনিক দিনকালের ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক এড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাবেক ছাত্রনেতা ফজলুল হক মিলন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।
ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সাজুর সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খায়রুল বাশার, সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ আলম, ডিইউজের কোষাধ্যক্ষ গাযী আনোয়ার, প্রচার সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসাইন, দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য আব্দুস সেলিম, একেএম মহসীন, জাকির হোসেন, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য রফিক লিটন প্রমুখ। রুহুল আমিন গাজী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার দিনকাল বন্ধ করেছে। দিনকাল বন্ধের প্রতিবাদ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় ছাড়া গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। এজন্য এই সরকারের পতন আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
শওকত মাহমুদ বলেন, এই সরকারের কাছে চাওয়ার কিছু নেই, কেড়ে নেয়ার সময় এসেছে। সকল বন্ধ মিডিয়া খুলে দিতে হবে, সকল কালাকানুন বাতিল করতে হবে। যারা এসবের সাথে জড়িত তাদের শাস্তি দিতে হবে। জনগণের সাথে মিলিত হয়ে চূড়ান্ত আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদী সরকারকে বিদায় করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, এই সরকার ১৯ ফেব্রুয়ারি দিনকাল বন্ধ করে দিয়ে আরেকটি কালো দিন উপহার দিয়েছে। এর আগে আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ান, সিএসবি সহ বহু সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে একের পর এক কলো দিবস উপহার দিয়েছে। দলবাজ আমলাদের পরামর্শে সরকার দিনকাল নয়, মানুষের কন্ঠস্বর, গণতন্ত্রের পক্ষের কন্ঠ স্তব্ধ করে দিয়েছে। এই সরকার গণমাধ্যমের শত্রু হিসেবে বারবার প্রমাণ দিয়েছে। দিনকাল বন্ধ করে আবারও প্রমাণ দিল। নিত্যপণ্যের সীমাহীন দাম বাড়ায় মানুষের দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আর গণভবনে মাছ ধরে, সিমের সাথে ছবি তুলে পত্রিকায় ছবি ছাপাতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতেই বুঝা যায় এই সরকারের জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। এই সরকারকে আর কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। বন্ধ মিডিয়া চালু করতে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে হবে।
এম এ আজিজ বলেন, দিনকাল পত্রিকা বন্ধ সরকারের সবশেষ আক্রমন। এর আগেও অসংখ্য পত্রিকা সরকার বন্ধ করেছে। বর্তমানে কেউ বলে না দেশে গণতন্ত্র আছে। এই সরকার কতৃত্ববাদী সরকার। এই সরকারের পতনই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারে। নুরুল আমিন রোকন বলেন, এই সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই মিডিয়া বন্ধ করে বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়। এখনও তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এরই অংশ হিসেবে দিনকাল বন্ধ করেছে। দিনকালসহ সব মিডিয়া খুলে না দিলে সরকারের পরিণাম ভাল হবে না। কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ৩৬ বছরের একটি পুরাতন পত্রিকা ফ্যাসিবাদী সরকার বন্ধ করে দিয়ে অসংখ্য সাংবাদিককে বেকার করে দিয়েছে। দিনকালের মতো অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অবিলম্বে দিনকাল পত্রিকা খুলে দিন। তা নাহলে সাংবাদিক সমাজ কঠোর জবাব দিবে। মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, দিনকাল বন্ধ করে সরকার আবারো ফ্যাসিবাদের প্রমাণ দিলো। অবিলম্বে দিনকাল পত্রিকা খুলে দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: