সোনা-টাকা চুরির পর দেখে ফেলায় নানিকে হত্যা
প্রথম নিউজ, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আয়শা বেগম (৬১) নামে এক বৃদ্ধা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে তার নাতি মো. রাকিবকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি নিহতের মেয়ে নাসরিন আক্তার বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন। পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি নিজ বাসা থেকে রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়।
পিবিআই জানায়, ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাদীর মা আয়শা বেগম সিদ্ধিরগঞ্জে তার বাসায় আসেন। বাদীর মা বাসায় আসার পর ওইদিন বিকেল থেকে রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার আগে যেকোনো সময় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতিকারীরা বাদীর বাড়িতে ঢুকে তার মাকে শ্বাসরোধ হত্যা করেন। পরে বাদীর ঘরে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা, সাত ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ মোট ৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যান।
মামলার পর বিশ্বস্ত সোর্স নিয়োগ করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পিবিআই জানতে পারে যে, ভুক্তভোগী আয়শা বেগমের মেয়ে নাছরিনের ছেলে রাকিব এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তিনি ব্যাংক লোন নিয়ে অনলাইনে জুয়া খেলে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং তার চলাফেরা ছিল উশৃঙ্খল প্রকৃতির। এমন তথ্যে তদন্ত দলের সন্দেহ হলে রাকিবের কর্মস্থল মডেল গার্মেন্টসে তথ্য নিয়ে জানা যায়, যে তিনি ঘটনার দিন কর্মস্থলে যাননি। পরবর্তীকালে পিবিআই টিম রাকিবকে ১৬ ফেব্রুয়ারি তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
পিবিআই আরও জানায়, ঘটনার দিন বাসায় কেউ থাকবে না সেটা রাকিব আগে থেকে জানতে পেরে কর্মস্থলে না গিয়ে গোপনে বাসার আশপাশে অবস্থান নেন। পরবর্তীকালে বিকেলে বাসার সবাই অন্যত্র চলে গেলে সন্ধ্যায় বাসার মেইন গেট দিয়ে প্রবেশ করে হাতুড়ি দিয়ে বাদীর রুমের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে আলমারির তালা ভেঙে স্বর্ণালঙ্কারসহ টাকা-পয়সা লুট করেন। তারপর হঠাৎ তার নানি আয়শা বেগম বাসায় চলে আসলে তিনি ভয় পেয়ে যান। তখন নানিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
তারপর লুট করা সোনা কালিবাজারের স্বর্ণপট্টিতে ভাসমান অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির কাছে ৪০ হাজার হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন রাকিব। এছাড়া কেউ যেন সন্দেহ না করে সেজন্য দ্রুত বাসার আশপাশে অবস্থান নিয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন।
পিবিআই পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেফতার আসামি রাকিব হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে নিজের সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
রাশেদুল ইসলাম রাজু/এমআরআর/এএসএম