ট্রলের প্রথম কয়েক দিন খুব কেঁদেছিলাম

ট্রলের প্রথম কয়েক দিন খুব কেঁদেছিলাম

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মংলা (বাগেরহাট) থেকে ঢাকায় এসেছিলেন রাজ রিপা। এর পর জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘দহন’ ছবিতে ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। পরে ‘মুক্তি’ নামে আরেক ছবির লিড রোল করেন। সেই ছবি মুক্তির আগে রাজ রিপার ‘ময়না’ নামে আরেক ছবি মুক্তি পাচ্ছে।
১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে মঞ্জুরুল ইসলাম মেঘের ‘ময়না’। নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন রাজ রিপা। এই ছবি ও অন্যান্য বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ।

এই অনুভূতি বলে বোঝানো যাবে না। দীর্ঘ সাত বছর পর আবার দর্শক আমাকে বড় পর্দায় দেখবেন। এই সাত বছর আমি অনেক যুদ্ধ করেছি, অনেকবার হেরে গিয়েছি, কেঁদেছি, আবার শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছি। এখন সফলতার মুখ দেখার অপেক্ষায়।

ভালোবাসা দিবসের মতো একটি বিশেষ দিনে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। নিজেও নিশ্চয়ই প্রেম করেন?

হ্যাঁ। প্রেমের মধ্যে থাকতেই ভালো লাগে। তবে এখন যে প্রেমটি করছি, সেটা তিন বছর ধরে চলছে। আশা করছি, এই প্রেমিকের বুকেই বাকি জীবন পার করতে পারব।
সে যেমন আমাকে বোঝে, আমিও তার ভালো-মন্দ বুঝতে পারি। মাঝেমধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়, সেটা এক-দুই ঘণ্টার মধ্যে আবার ঠিক হয়ে যায়। ইচ্ছা আছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার হলগুলোতে আমার প্রেমিকের সঙ্গেই ছবিটি দেখব।

রায়হান রাফীর ‘দহন’ ছবিতে আপনার উপস্থিতি ছিল। ওটাকে ভুলে গিয়ে কি ‘ময়না’কে প্রথম চলচ্চিত্র বলতে চান?

একদমই না। ‘দহন’-এর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া, ‘ময়না’রও প্রযোজক তারা। ‘দহন’-এ আমার চরিত্রের নাম ছিল ‘ফুলবানু’। সে নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় আসে। একটা সময় নায়িকাও হয়, তবে বোমা হামলায় নিহত হয়। ‘ময়না’তে ফুলবানুর নায়িকা হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন প্রযোজক। ফলে আমি ‘দহন’কে কখনোই আমার ক্যারিয়ার থেকে মুছতে পারব না।

‘ময়না’র আগেই ‘মুক্তি’ শুরু করেছিলেন। সেটার কী খবর?

তিন বছর ধরে দর্শক ছবিটির প্রতীক্ষায় রয়েছেন। এখনো তাঁরা আশাহত হননি। ফলে আমিও আশাবাদী, ‘মুক্তি’ যখনই হলে আসবে দর্শক গ্রহণ করবে। এর মধ্যে একটি গান বাদে সব শুটিং শেষ হয়েছে। শিগগিরই এফডিসিতে সেট ফেলে গানটির শুটিং হবে বলে পরিচালক ইফতেখার চৌধুরী জানিয়েছেন। কোনো একটা উৎসবে ছবিটি মুক্তি দিতে চান তিনি। আমার বিশ্বাস, এ বছরই ছবিটি দর্শকের সামনে আসবে।

আপনাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ট্রল হয়েছে। বিশেষ করে সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগে আপনার বলা ‘আমার চার দেয়নি’ নিয়ে...

বরাবরই মানুষের প্রশংসা পেয়ে অভ্যস্ত। ফলে ট্রল হলে কেমন লাগে বুঝতাম না। চার মেরে সেটা বুঝেছি। ‘ওরা সত্যিই আমাকে চার দেয়নি’। ট্রলের প্রথম কয়েক দিন খুব কেঁদেছিলাম। পরে যখন বুঝলাম মানুষের হাসির কারণ হয়েছি আমি, তখন স্বাভাবিকভাবে নিয়েছিলাম।  

ব্যাডমিন্টনে জাতীয় পর্যায়ে খেলেছেন। খেলা থেকে সরে এলেন কেন?

খুলনা বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন ছিলাম। আমার বাবা চাইতেন খেলাটাই আমার ধ্যান-জ্ঞান হোক। অন্যদিকে ছোটবেলা থেকে আমার স্বপ্ন ছিল, নায়িকা হব। একদিন বাবাকে বললাম, ঢাকায় যাব পড়তে। সেখানে মডেলিংটাও শুরু করব। বাবা বললেন, খুলনা ছেড়ে কোথায় যাওয়া যাবে না। অমনি আমিও জেদ ধরলাম, বাবার স্বপ্নের খেলাটাও ছেড়ে দেব। শেষ পর্যন্ত আমিই জয়ী হলাম, বাবা অনুমতি দিলেন। অবশ্য খেলাটা আজও খুব মিস করি।

বিজ্ঞাপনচিত্রে আপনাকে সাকিব আল হাসানের মতো খেলোয়াড়ের সঙ্গেও দেখা গেছে। অথচ এখন বিজ্ঞাপন করছেন না কেন?

করোনা টিকার সাইড ইফেক্টে পড়েছিলাম দুই বছর আগে। আট মাস ছিলাম অসুস্থ। তখন অনেক বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করার প্রস্তাব পেয়েও ছেড়ে দিতে হয়েছে। গত বছর সুস্থ হলাম। পরে যেসব প্রস্তাব পেলাম সেগুলো আমার আগের বিজ্ঞাপনচিত্রগুলোর মানের চেয়েও খারাপ। তাই আর করিনি।

মাঝখানে আপনার বিরুদ্ধে একজন প্রযোজককে মারপিটের অভিযোগ উঠেছিল। ব্যাপারটা কতটুকু সত্যি?

সম্পূর্ণ মিথ্যে। আর যাকে ঘিরে এমন খবর রটেছিল তিনি কখনো প্রযোজক ছিলেন না। একটা নাটক বা সিনেমাও তিনি নির্মাণ করেননি। শুধু শুধু ক্রোধের বশে কেউ এমন খবর রটিয়েছে।

নতুন কী করছেন?

নতুন একটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। মার্চে শুটিং। একটা প্রসাধনী ব্রান্ডে শেয়ার আছে আমার। ‘স্যাভি বিউটি’ নামের ব্রান্ডটির প্রমোশনেও কাজ করছি।