ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রস্তুতির তদারকিতে ৫ কমিটি ইসির

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পাঁচটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চার নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে এ পাঁচটি কমিটি গঠন করা হয়। প্রতিটি কমিটিতে ইসির সিনিয়র সচিব ও অতিরিক্ত সচিবসহ সাতজন করে কর্মকর্তা আছেন। প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের রাখা হয়নি। কমিটিগুলোর যে কার্যপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে, তার বেশির ভাগই তফসিল ঘোষণার পরবর্তী কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বুধবার নির্বাচন কমিশন পৃথক পাঁচটি কমিটি গঠনের অফিস আদেশ জারি করেছে।
এসব কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ভোটের দায়িত্বে থাকা মাঠ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খল বাহিনীর কার্যক্রমের তদারকি ও সমন্বয় করবে। নির্বাচনে সম্ভাব্য সহিংসতা, সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা নিরূপণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেবে। নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর গঠিত ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কার্যক্রমও তদারকি করবে। নির্বাচন ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ কার্যক্রমও মনিটরিং করা হবে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা রয়েছে। বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ অবস্থায় এই পাঁচ কমিটি গঠন করল ইসি।
নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করবে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের কমিটি। ওই কমিটি নির্বাচনের আগে ও ভোটের সময় বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ, সমন্বয় ও পরামর্শ দেবে। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী কার্যক্রম বাস্তবায়নে নির্দেশনা দেওয়া, নির্বাচনের সময়ে উদ্ভূত যে কোনো সংকট নিরসনে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণে পরামর্শ ও সহযোগিতা দেবে। আচরণবিধি প্রতিপালনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে সমন্বয় করবে এ কমিটি। কমিটিতে ইসির সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকসহ সাতজন সদস্য রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিংয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি নির্বাচন পরিচালনা কাজের নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমের তদারকি ও সমন্বয় করবে। নির্বাচনী এলাকা ও ভোটকেন্দ্রের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় করবে। এ ছাড়া নির্বাচনে সম্ভাব্য সহিংসতা, সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা নিরূপণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেবে এ কমিটি।
ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কার্যক্রম তদারকি ও সমন্বয়বিষয়ক কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ। সাত সদস্যের এ কমিটি নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত রিটার্নিং কর্মকর্তা, মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য নির্দেশিকা ও ম্যানুয়াল প্রস্তুত কাজের সমন্বয় করবে। এ ছাড়া নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর গঠিত ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কার্যক্রমও তদারকি করবে।
নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদের নেতেৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম তদারকি করার জন্য। ওই কমিটি জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কর্মকর্তা ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত কাজের তদারকি করবে। প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ ও প্রশিক্ষণসংক্রান্ত কার্যক্রমও তদারকি করবে এ কমিটি।
প্রবাসীদের ভোটাধিকার এবং বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক সমন্বয় করতে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তার নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের কমিটি প্রবাসীদের ভোটাধিকার পদ্ধতি প্রণয়ন এবং এ কাজে বিভিন্ন দূতাবাসের সঙ্গে সমন্বয় করবে। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের কার্যক্রম তদারকি করবে এ কমিটি।