Ad0111

ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন আটকে দিয়ে গার্মেন্ট শিল্পে আধিপত্য নিতেন জাহাঙ্গীর

ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গাজীপুরে গার্মেন্ট কারখানার মালিকদের পোহাতে হয়েছে নানা যন্ত্রণা।

ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন আটকে দিয়ে গার্মেন্ট শিল্পে আধিপত্য নিতেন জাহাঙ্গীর
গাজীপুর সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম

প্রথম নিউজ, গাজীপুর: তৈরি পোশাক (গার্মেন্ট) শিল্পের নগরী বলা হয় গাজীপুরকে। দেশের প্রায় সব বড় গার্মেন্ট শিল্প গড়ে উঠেছে গাজীপুরকে কেন্দ্র করে। দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রয়েছে এই শিল্পের। অথচ মতের অমিল হলে এই শিল্পেও আঘাত হেনেছেন গাজীপুর সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। মেয়র হয়েও পুরনো নেশা ও পেশা পোশাক কারখানার ঝুটের ব্যবসা ছাড়তে পারেননি তিনি। ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গাজীপুরে গার্মেন্ট কারখানার মালিকদের পোহাতে হয়েছে নানা যন্ত্রণা।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর গার্মেন্ট মালিকদের সঙ্গে বনিবনা না হলে ক্ষমতা দেখাতেন মেয়র। পরে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে আসলে ওই তৈরি পোশাক কারখানাকে আটকে দেওয়া হতো। ব্যবসায়িক দফা-রফায় মিলতো ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের কাজ। বনিবনা না হলে বন্ধ করে রাখা হতো নবায়নের কাজ। আর ভোগান্তিতে পড়তে হতো তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের। পোহাতে হতো নানা যন্ত্রণা। যেসব গার্মেন্ট মেয়র জাহাঙ্গীর বা তার অনুসারীদের ঝুট কাপড়ের ব্যবসা দিতো না সেসব গার্মেন্টের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন হতো না। অনেক গার্মেন্টকে বিনা পয়সায় তাদের ঝুট দিয়ে দিতে হতো। কারখানায় নিজের আধিপত্য জাহাঙ্গীর এভাবেই টিকিয়ে রাখতেন।

 গত তিন বছরে প্রায় অর্ধশত পোশাক কারখানা মালিককে পোহাতে হয়েছে এই যন্ত্রণা। জানা গেছে, এলিট গার্মেন্টস, টিআরজেড, লক ভিউ ইন্টারন্যাশনাল,  ব্রাভো, মেঘনা টেক্সটাইল, ইউডি গার্মেন্টস, ইনস্পেক্টাসহ অর্ধশত গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন দিনের  পর দিন মেয়রের ক্ষমতাবলে আটকে রেখেছেন জাহাঙ্গীর।

অভিযোগ রয়েছে—নিয়মের বাইরে বিশ-ত্রিশগুণ বেশি টাকা নিতেন নবায়ন ফি বাবদ। মেয়রের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকায় সকল গার্মেন্ট মালিক জাহাঙ্গীরের অত্যাচার-নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করে নিয়েছেন। প্রতিবাদ করলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার ভয়ে এতদিন কেউ কোনও কথা বলেননি। এখন বিক্ষুব্ধ ওই মালিকেরা বিচার চেয়ে বিভিন্ন মহলে মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে চলেছেন।

সোমবার (২২ নভেম্বর)  এসব তৈরি পোশাক কারখানার প্রতিনিধিরা আসেন ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল্লাহ আল মামুন মণ্ডলের গাজীপুর বোর্ড বাজারের কাউন্সিলর কার্যালয়ে। তারা অভিযোগ করেন‑ কারখানার ঝুট ব্যবসার নামে মালিকদের উপর অনেক অত্যাচার করেছেন জাহাঙ্গীর। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলিট গার্মেন্টসের এক কর্মকর্তা  বলেন,  মেয়র জাহাঙ্গীরের অত্যাচার-নির্যাতন চরমে পৌঁছে গেছে। তাই সৃষ্টিকর্তা তাকে শাস্তি দিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেঘনা টেক্সটাইলের এক কর্মকর্তা বলেন, জাহাঙ্গীর এই গাজীপুরে রাজত্ব কায়েম করতে চেয়েছেন। তার মতের বা ইচ্ছার বাইরে যাওয়ার মতো সাহস আমরা দেখাতে পারিনি। এখানে ব্যবসা করি বলে অনেক অন্যায় আবদার রাখতে হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের নাম-ধাম উল্লেখ করে কিছু লিখবেন না। এখনও তো মেয়র পদ আছে, টিকে গেলে আর রক্ষা পাব না। এখানে ব্যবসা করে খেতে হবে আমাদের।

এই প্রসঙ্গে মেয়রের বক্তব্য নিতে তার বাসার সামনে গিয়ে চেষ্টা করা হলেও মন্তব্য নেওয়ার সুযোগ দেননি বিতর্কিত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। এ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর আবদুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল বলেন, বোর্ড বাজার এলাকায় অনেক তৈরি পোশাক কারখানার মালিক মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসতেন আমার কাছে। যেহেতু আমার ওয়ার্ডে তাদের কারখানা, আমি মেয়রের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে তিনি উত্তেজিত হয়ে যেতেন। বলতেন‑ মেয়র হিসেবে এই এখতিয়ার আমার আছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news