গাজাবাসীদের হাতে এখনও ত্রাণ পৌঁছেনি: জাতিসংঘ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ১ সপ্তাহের অবরোধের পর মঙ্গলবার গাজায় প্রবেশ করেছে ৯৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক, তবে এখনও একটি প্যাকেট ত্রাণও মানুষের হাতে পৌঁছেনি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রাকগুলোতে আটা, শিশু খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী ছিল। তবে জাতিসংঘের দাবি—এইসব ট্রাক কেরেম শালোম সীমান্ত দিয়ে গাজায় ঢুকলেও, সেগুলোর ত্রাণ এখনো মজুদগারে ওঠানো সম্ভব হয়নি।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিচ জানান, তাদের একটি দল কয়েক ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করলেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মজুদগারে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।
ফলে ত্রাণ বিতরণ শুরু করা যায়নি।
গত রবিবার ইসরায়েল ‘প্রাথমিক কিছু খাদ্য’ প্রবেশের অনুমতি দেয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে। যুক্তরাজ্য বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের ‘নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য’ সামরিক অভিযানের কারণে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করছে।
প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার পরিস্থিতিকে ‘অসহনীয়’ বলে উল্লেখ করেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া ক্যালাস জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ইউরোপীয় বাণিজ্য চুক্তিও পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।
দুজারিচ বলেন, ইসরায়েল জাতিসংঘকে বলেছে—ত্রাণসামগ্রী কেরেম শালোম সীমান্তে নামিয়ে রেখে গাজার ভেতরে প্রবেশের অনুমতির জন্য আলাদা করে অপেক্ষা করতে হবে। তিনি এটিকে ‘ভয়াবহ জটিলতা’ বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন—এই ত্রাণ আসা ‘সমুদ্রের এক ফোঁটা জল মাত্র’।
জাতিসংঘ বলছে, গাজার মানবিক সংকট মোকাবেলায় প্রতিদিন অন্তত ৬০০টি ট্রাক প্রয়োজন।
জাতিসংঘের মানবিক প্রধান টম ফ্লেচার বিবিসিকে বলেন, ‘পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় সাহায্য না পৌঁছালে গাজায় ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে।’ যদিও এই সংখ্যাটি পরে স্পষ্ট করে বলা হয়—এটি একটি বছরের পূর্বাভাস, তাৎক্ষণিক নয়।
জাতিসংঘের মানবিক দপ্তর জানায়, গাজায় বর্তমানে ১৪ হাজার শিশুর তীব্র অপুষ্টিজনিত ঝুঁকি রয়েছে, যাদের জীবন বাঁচাতে জরুরি খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা প্রয়োজন। গত সপ্তাহে হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ১১ সপ্তাহে অপুষ্টিতে অন্তত ৫৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।