জাতিসংঘের ৭ কর্মকর্তা বরখাস্ত
প্রখম নিউজ ডেস্ক: দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগে জাতিসংঘের সাত কর্মকর্তাকে দেশ থেকে বরখাস্ত করেছে ইথিওপিয়া। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে দেশটি থেকে বেরিয়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) যখন তাদের বের করে দেওয়া হয়, তার দুদিন আগে বিশ্বের শীর্ষ সংস্থাটির প্রধান হুঁশিয়ারি করে দিয়ে বলেছেন, দাতব্য সহায়তায় সরকারের বাধায় টাইগ্রের উত্তরাঞ্চলে হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, টাইগ্রের অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনা ক্রমাগত বাড়ছে। উত্তর ইথিওপিয়ায় লড়াই করা সব পক্ষকে মার্কিন সরকারের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জেন সাকি বলেন, জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের বরখাস্তের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যারা মানবিক সহায়তায় বাধা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে কোনো ধরনের দ্বিধা করা হবে না।
তিনি বলেন, খাদ্য, ওষুধ ও প্রাণরক্ষাকারী রসদ সহায়তায় বাধা দেওয়ার মাধ্যমে ইথিওপীয় সরকার যে ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
এ নিয়ে ইথিওপিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে খাদ্য সহায়তা বন্ধের কথা অস্বীকার করেছে আফ্রিকান দেশটি। অনেকেই ইথিওপিয়াজুড়ে সংঘাত বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এতে অঞ্চলটিতে নতুন করে অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), মানবিক সহায়তা সমন্বয় কার্যালয়ের (ওসিএইচএ) ইথিওপীয়প্রধানসহ সাত কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আফ্রিকান জনবহুল দেশটি থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। বরখাস্তদের মধ্যে পাঁচজনই ওসিএইচএ’র। ষষ্ঠজন ইউনিসেফের। আর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের এক কর্মকর্তাও বরখাস্তের তালিকায় আছেন।
এমন সিদ্ধান্তে ব্যথিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেস। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা ইথিওপীয় সরকারের সঙ্গে কাজ করছি। জাতিসংঘের কর্মীদের কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
নভেম্বরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে টাইগ্রে জনমুক্তি ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) সংঘাত শুরু হয়েছে। টাইগ্রে অঞ্চলটিকে নিয়ন্ত্রণ করছে টিপিএলএফ নামের রাজনৈতিক দলটি। জুনের শেষ দিকে সেখানকার অধিকাংশ অঞ্চলের পুনর্নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর প্রতিবেশী আফার ও আমহারার দিকে অগ্রসার হয় তারা। এতে হাজার হাজার লোক তাদের বাড়িঘর থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের দাতব্যপ্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, টাইগ্রে সীমান্তে প্রায় তিন মাসের কার্যত অবরোধে খাদ্যসহায়তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় কেবল ১০ শতাংশ সহায়তা সেখানে পৌঁছানো গেছে। এতে সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, এটি মানবসৃষ্ট বাধা। সরকারের পদক্ষেপে এর সুরাহা হতে পারে। টাইগ্রের এক চতুর্থাংশ শিশু অপুষ্টিহীনতায় ভুগছে।