চব্বিশের পাতানো নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে ঐক্য নয় : জমিয়ত

প্রথম নিউজ, অনলাইন: জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী বলেছেন, বাংলাদেশের সচেতন তওহিদি জনতা, ইসলামপন্থি শক্তি ও গণতন্ত্রকামী জনগণ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি কথিত জাতীয় নির্বাচনকে একটি নিখুঁত প্রহসন ও পাতানো নির্বাচন হিসেবে দেখেছে। জনগণের অংশগ্রহণহীন, স্বৈরতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পরিচালিত ওই নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গণতন্ত্রের মর্যাদা হরণ করেছে।
তিনি বলেন, ওই ভুয়া নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছে, তারা প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী সরকারের ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার সহায়তা করেছে। সুতরাং তাদের নিয়ে ইসলামি শক্তির কোনো জোট বা ঐক্য গড়ে তোলার চিন্তাই অবাস্তব, অযৌক্তিক এবং আদর্শচ্যুতির শামিল। বুধবার (৯ জুলাই) জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ময়মনসিংহ মহানগরীর কাউন্সিলরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ময়মনসিংহ জেলার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ সাদীর সভাপতিত্বে এবং মাওলানা নুর উদ্দিন সরকার ও মাওলানা তানভীর আহমদ এর যৌথ পরিচালনায় ময়মনসিংহ আকুয়া বাইপাস রোডস্থ এস আর কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মাহবুবুল্লাহ কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা লোকমান মাযহারী, মাওলানা মুহাম্মদ বিন হাফেজ্জী, প্রচার সম্পাদক মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী, মুফতি জাকির হোসাইন, মাওলানা আব্দুল্লাহিল বাকী ও মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ সুবহানী প্রমুখ।
মাওলানা ইউসুফী আরও বলেন, সম্প্রতি ইসলামপন্থি শক্তির মধ্যে একটি বৃহত্তর ঐক্য গঠনের মুখরোচক আলোচনা চলছে। তবে এই ঐক্যের পথে আগাতে হলে প্রথমেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক ও আদর্শিক প্রশ্নের জবাব দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বিগত সময়ে কিছু ইসলামি দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যভাবে ‘ইসলাম বিরোধী’ বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। এখন সেই দলগুলোর কেউ কেউ আবার তাদেকে সঙ্গে নিয়ে ইসলামি জোট গঠনের চেষ্টা করছে। এটি সাধারণ কর্মী, তওহিদি জনতা এবং অন্যান্য ইসলামপন্থি দলের কাছে এক ধরনের বিভ্রান্তির জন্ম দিচ্ছে। আপনার যে কোনো দলের সাথে জোট করতে পারেন। এটি আপনাদের রাজনৈতিক অধিকার। তবে এটা ইসলামি জোট হতে পারে না। আপনারা অন্য নামে জোট করুন ।
মাওলানা লোকমান মাযহারী বলেন, কওমি মাদ্রাসা নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্যের জন্য সরকারের উপদেষ্টা শারমিন এস মোর্শেদকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে যে বিষোদগার ও অপমানজনক বক্তব্য দিয়েছে, তা শতবর্ষ পুরনো ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত। তার বক্তব্য কেবল কওমি অঙ্গন নয়, বরং সমগ্র আলেম সমাজ, ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং দেশের তওহিদি জনতার হৃদয়ে আঘাত হেনেছে। কওমি মাদ্রাসা এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, নৈতিকতা রক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষার বিস্তারে যে ঐতিহাসিক অবদান রেখেছে, তা কোনোভাবেই অস্বীকারযোগ্য নয়।
কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে ময়মনসিংহ মহানগরীর সভাপতি, মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ সুবহানী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নুর উদ্দিন সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা তানভীর আহমদ ও প্রচার সম্পাদক মুফতি সাইদুল ইসলাম কাসেমী।