গ্রাহকের এক কোটি ৭৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল আব্দুল বাকীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার যশোর কোতোয়ালি থানায় অভিযুক্ত আব্দুল বাকীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
তবে লেজারে ও সঞ্চয় বইয়ে নিজে টাকা জমা দেখিয়েছেন তিনি। কাউন্টারে যেদিন বেশি ভিড় থাকত সেদিন তিনি এসব বই থেকে টাকা তুলতেন সরকারি কর্মকর্তাদের পরিচয় ব্যবহার করে। যে কারণে কাউন্টারে থাকা কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ পেতেন না। ২ ফেব্রুয়ারি শহরতলির উপশহর ই-ব্লকের মোহাম্মদ আলী নামে এক সঞ্চয়ী হিসাব থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ১৩ লাখ টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেন আবদুল বাকী। বিষয়টি ধরেন ডেপুটি পোস্ট মাস্টার মেহেরুন্নেছা। তিনি জানান, সরকার ২০২০ সালের ১৮ মে এক আদেশে ডাকঘরে সঞ্চয় হিসাবে ১০ লাখ টাকার ওপরে রাখা নিষেধ করে দেয়। কিন্তু সঞ্চয় হিসাব থেকে ১৩ লাখ টাকা উত্তোলন সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে আমার সন্দেহ হয়। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় ওই হিসাবে রয়েছে মাত্র একশ টাকা। বিষয়টি খুলনা জোন প্রধানকে অবহিত করা হলে তিনি টাকা উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দেন।
৮ ফেব্রুয়ারি খুলনার পোস্ট মাস্টার জেনারেল শামসুল আলমের নেতৃত্বে একটি টিম যশোর প্রধান ডাকঘরে তদন্তে আসে। তদন্তের পর সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল আব্দুল বাকীকে দুদিন আগে খুলনা বিভাগীয় অফিসে স্ট্যান্ডরিলিজ করা হয়। সেখানে শুক্রবার রাতে তাকে আটক করে পুলিশ। ওই রাতেই খুলনা থেকে যশোর কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, মামলাটি দুদকে হস্তান্তর করা হবে।
এ বিষয়ে দক্ষিণাঞ্চল খুলনার পোস্ট মাস্টার জেনারেল সামসুল আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে বাকীর কর্মকাণ্ড নিয়ে তদন্তের জন্য টিম গঠন করা হয়। তদন্ত টিমের সদস্যরা হলেন-খুলনা দক্ষিণাঞ্চলের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল (তদন্ত) খন্দকার মাহাবুব হোসেন, যশোর বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মিরাজুল হক, খুলনা দক্ষিণাঞ্চলের সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল (নিরাপত্তা) ফিরোজ আহমেদ, খুলনা সার্কেলের সুপারিনটেনডেন্ট (তদন্ত) বাবুল আখতার, খুলনা দক্ষিণ উপবিভাগের পোস্ট অফিস পরিদর্শক প্রনবেশ গাইন, যশোর ডাক বিভাগের শহর পরিদর্শক পবিত্র কুমার গাইন। তদন্ত টিমের সদস্য ফিরোজ আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, আমাদের তদন্ত এখনো অব্যাহত রয়েছে। আবদুল বাকী আরও টাকা আত্মসাৎ করেছেন কিনা তা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর তদন্ত প্রতিবেদন আমরা জমা দেব। দুর্নীতি দমন কমিশন যশোরের উপপরিচালক আল আমিন জানান, পোস্ট অফিস থেকে গ্রাহকদের নামে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মামলা হয়েছে বলে জেনেছি। মামলাটি আমাদের কাছে পাঠানো হবে। তখন আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখব।