উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ফুটবল তারকা সুনীল ছেত্রির অবসর ঘোষণা
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : ভারতীয় ফুটবলে একটি যুগের অবসান। অবসর নিতে চলেছেন সুনীল ছেত্রি। সেই অবসর হতে চলেছে কলকাতাতেই। আগামী ৬ জুন যুবভারতী স্টেডিয়ামে কুয়েতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ম্যাচটি হবে সুনীলের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় এ কথা জানিয়েছেন ভারতের এই কিংবদন্তি ফুটবলার। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
বৃহস্পতিবার সকালে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওবার্তা পোস্ট করেন সুনীল। সেখানে তিনি বলেন, ‘একটা দিন জীবনে কোনও দিন ভুলতে পারব না। যে দিন দেশের জার্সি গায়ে প্রথম বার ভারতের হয়ে খেলতে নেমেছিলাম। অবিশ্বাস্য অনুভূতি। তবে তার আগের দিন সকালে জাতীয় দলে আমার প্রথম কোচ সুখী স্যর (সুখবিন্দর সিংহ) এসে আমাকে জানিয়েছিলেন, প্রথম একাদশে আমি রয়েছি। বলে বোঝাতে পারব না সেই অনুভূতি কেমন ছিল।’
সুনীল বলেছেন, ‘জার্সি প্রথম হাতে পাওয়ার পর তাতে কিছুটা সুগন্ধি ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। জানি না কেন। সেই দিন যা যা হয়েছিল, প্রাতরাশ থেকে মধ্যাহ্নভোজের টেবিলের কথাবার্তা, ম্যাচে আমার মাঠে নামা এবং অভিষেক ম্যাচেই গোল, তার পরে ৮০ মিনিটে গোল হজম করা, জাতীয় দলে আমার যাত্রা শুরুর প্রথম দিনের এই ঘটনাগুলোর কথা কোনও দিন ভুলতে পারব না।’
২০০৫ সালের ১২ জুন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে প্রথম ম্যাচ খেলেন সুনীল। অভিষেক ম্যাচেই গোল করেছিলেন। ২০০৭ নেহরু কাপে প্রথম ম্যাচে কম্বোডিয়াকে ৬-০ হারিয়েছিলো ভারত। দুটি গোল করেন সুনীল। সিরিয়ার কাছে হার এবং কিরগিজস্থানের বিরুদ্ধে জয়ের ম্যাচেও গোল করেন তিনি।
সেই শুরু। তার পর থেকে ক্রমশ ভারতের এক নম্বর স্ট্রাইকার হয়ে ওঠেন সুনীল। বাইচুং ভুটিয়া অবসর নেওয়ার পর সুনীলই ভারতীয় ফুটবলের প্রধান মুখ হয়ে ওঠেন। নিজস্ব প্রতিভা এবং দক্ষতায় তিনি বাকিদের টেক্কা দিতে থাকেন। বব হাউটন থেকে ইগর স্তিমাচ, কোনও কোচই সুনীলকে ছাড়া দল করতে পারেননি।
জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামলে এখনও সুনীলের দিকে তাকিয়ে থাকেন সমর্থকরা। কতবার তিনি ভারতকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন বা দেশকে গর্বিত করেছেন, তা গুনে শেষ করা যাবে না। এখনও পর্যন্ত সুনীলের যোগ্য উত্তরসূরি খুঁজে পাওয়া যায়নি। সম্ভাব্য হিসাবে অনেকের নাম উঠে আসছে। কিন্তু সুনীলের জায়গা কে পূরণ করবেন, তা নিয়ে এখনও জল্পনা চলছে।
সুনীলের অবসর তাই একটি যুগের অবসান। গত প্রায় এক দশক ধরে সুনীল যে ভাবে ভারতীয় ফুটবলের পতাকাবাহক হয়ে উঠেছিলেন, তা অবশেষে শেষ হতে চলেছে।