৫ অক্টোবর ইউরেনিয়াম হস্তান্তরে ভার্চুয়ালি যোগ দেবে পুতিন

সড়ক পথে ঢাকা থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শুক্রবার ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান নিয়ে ২৪টি গাড়ির একটি বহর পাবনায় আসে এবং ইউরেনিয়াম ভর্তি স্বদেশ গ্রুপের তিনটি কাভার্ডভ্যান রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রবেশ করে।

৫ অক্টোবর ইউরেনিয়াম হস্তান্তরে ভার্চুয়ালি যোগ দেবে পুতিন

প্রথম নিউজ, পাবনা: ‘ফ্রেস নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম আনার মধ্য দিয়ে দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বড় প্রকল্প পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা আরও একধাপ এগিয়ে গেল। সড়ক পথে ঢাকা থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শুক্রবার ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান নিয়ে ২৪টি গাড়ির একটি বহর পাবনায় আসে এবং ইউরেনিয়াম ভর্তি স্বদেশ গ্রুপের তিনটি কাভার্ডভ্যান রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রবেশ করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ১৯৬১ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি প্রথম গৃহীত হয় এবং সেই সময় প্রকল্পের জন্য ২৬০ একর ও আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এছাড়া সাইট অফিসসহ বেম কিছু জনবল নিয়োগ করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সেটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে এবং যুগ যুগ ধরে শুধু রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবেই উজ্জীবিত থাকে। এরপর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার ছিল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা। এরই ধারাবাহিকতায় এটি বাস্তবায়নের জন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু সংস্থা রসাটমের সঙ্গে চুক্তি হয়। ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই বৃহৎ প্রকল্প বাস্তাবায়িত হচ্ছে। দেশের ইতিহাসে এটি সর্বকালের বৃহৎ মেগা প্রকল্প।

সূত্র আরও জানায়, ইতোমধ্যে প্রথম ইউনিটের কাজ শেষপর্যায়ে এবং এখন জ্বালানি ব্যবহারের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে প্রথম ইউনিট। আগামী বছরের প্রথম দিকে ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে এবং ওই সময়ে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের একই সময়ের মধ্যে জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালনা লাইনও প্রস্তত রাখতে হবে। এজন্য প্রস্ততিমূলক কাজ চলছে। এদিকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ইউরেনিয়াম পরিবহণে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।

ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, মোট ২৪টি গাড়ি ছিল ইউরেনিয়াম বহরে। এর মধ্যে তিনটি কাভার্ডভ্যানে ইউরেনিয়াম এবং অন্যান্য গাড়িতে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবিসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আসেন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে পাবনা–ঢাকা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী বলেন, ইউরেনিয়াম আনার পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে। আগামী ৫ অক্টোবর রূপপুর প্রকল্পে এ জ্বালানি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ। 

সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ২০২৪ সালের প্রথমদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র রূপপুর। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে। দুটি ইউনিটে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।