হালুয়াঘাট সীমান্তে কৃষকের ৫০ একর ধান ফসলে হাতির তান্ডব

পটকা ফাটিয়ে মশাল জ্বালিয়ে লাঠি হাতে সরব থাকলেও প্রতিহত করা যাচ্ছে না হাতির তান্ডব

হালুয়াঘাট সীমান্তে কৃষকের ৫০ একর ধান ফসলে হাতির তান্ডব

প্রথম নিউজ,ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতের গারো পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতির পালের তান্ডবে কৃষকের প্রায় ৫০ একর ধান ক্ষেতের ব‍্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিদিন সন্ধ‍্যা নামতেই ভুক্তভোগী শত শত কৃষক রাত জেগে পাহাড়া বসিয়ে পটকা ফাটিয়ে মশাল জ্বালিয়ে লাঠি হাতে সরব থাকলেও প্রতিহত করা যাচ্ছে না হাতির তান্ডব।

খবরের সত‍্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলার ভূবনকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: সুরুজ মিয়া। তিনি জানান, কৃষকের ফসল রক্ষায় ইউনিয়ন  পরিষদের তহবিল থেকে কেরোসিন, টর্চলাইন ও পটকা সরবরাহ করে সহযোগিতা করা হচ্ছে। 

এছাড়াও স্থানীয়দের নিয়ে হাতি তাড়াতে গ্রামে গ্রামে কৃষকদের টিম করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। কৃষকরা যেন আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। 

ইউপি চেয়ারম্যান আরও জানান, স্থানীয় জামগড়া মহিষলেটি, ধোপাঝুড়ি, কোচপাড়া, রঙ্গমপাড়া এবং কড়ইতলী এলাকায় হাতির তাণ্ডবে কৃষকদের অন্তত ৫০ একর জমির রোপনকৃত রোপা আমন ধান খেয়ে এবং পা দিয়ে পিষ্ট করে নষ্ট করে ফেলেছে। 

স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, পাহাড়ী বন্যহাতির তান্ডবে সীমান্তবর্তী ভূবনকুড়া ইউনিয়েনের কয়েকটি গ্রামের ৩২ জন কৃষকের প্রায় ৪০ একরের অধিক জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। 

ভুক্তভোগী কৃষকরা জানায়, বিগত কয়েক বছর হাতির আক্রমণ কম ছিল। কিন্তু এ বছর প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই দলবেঁধে অন্তত ৫০ থেকে ৭০টি বন্যহাতি দল খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে এসে ফসল নষ্ট করছে।

ক্ষতিগ্রস্থ কড়ইতলি এলাকার কৃষক মোহাম্মদ আলী জানান, প্রতি রাতে হাতির পাল জমির ধান নষ্ট করেছে। বিষয়টি সামাধানে সরকারি ভাবে পদক্ষেপ দাবি করছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, হাতির তান্ডবে অন্তত ৪০ একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। 

এবিষয়ে হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, অবস্থা উত্তরণে স্থানীয় যু্বকদের নিয়ে হাতি প্রতিরোধ টিম গঠন করা হয়েছে। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করে সরকারি ভাবে সহযোগিতার চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও বলেন, রাত হলে ভারতীয় হাতির পালের তান্ডব বেড়ে গেলে বিএসএফ সীমান্তের গেইট খুলে দেয়। ফলে বাংলাদেশের সীমান্তের কিছু এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় অবাধে হাতির পাল নেমে এসে কৃষকের ফসল নষ্ট করছে। বিষয়টি বিজিবি এবং বনবিভাগ কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।