হকার হত্যায় হাসিনা-মোজাম্মেল-রাসেল-জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা
বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার গাছা থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
প্রথম নিউজ, গাজীপুর : গাজীপুর মহানগরীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হকার আরিফ বেপারি (২৯) নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর-২ আসনের সাবেক এমপি জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ ১১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার গাছা থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
মামলায় বাদি হয়েছেন- নিহত আরিফ বেপারির বাবা রজ্জব আলী। তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলব থানার টরকী কান্দা এলাকায়। তিনি গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার ৩৫নং ওয়ার্ডের মৃধাবাড়ি পূর্ব কলমেশ্বর এলাকার হাজি সাইফুলের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। মামলায় আসামিদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা। অজ্ঞাত আসামি করা হয়ে ৩৫০ জনকে।
মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে-মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মতিউর রহমান মতি, সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান(বেন্সন মজিবুর), মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল, ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক আবদুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল, মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সঞ্জিত মল্লিক, সাবেক মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম দ্বীপ, আওয়ামী লীগ নেতা রিপন সরকার, রাকিব সরকার, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর হোসেন, সাবেক মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ রানা এরশাদ প্রমুখ।
বাদি মামলায় উল্লেখ করেন- শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আ ক ম মোজাম্মেল, জাহিদ আহসান রাসেল, আজমত উল্লাহ খান ও গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের নির্দেশ অনুযায়ী- বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, ছেন, চাপাতি, কোবাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনি জনতাবদ্ধে হয়ে গত ২০ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের বোর্ড বাজার ইসলামি ইউনিভার্সিটির সামনের রাস্তায় অবস্থানরত আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করা হয়। তাদের হুকুমে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্রধারী এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত আসামিরাসহ ছাত্র জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারি গুলি ছুঁড়তে শুরু করেন। এক সময় তাদের ছোড়া গুলিতে বিকাল ৩টার টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আরিফ বেপারি পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
ছেলের মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে তাৎক্ষণিক লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান বাদী। ছেলের মৃত্যুতে পরিবারের লোকজন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় এবং বিবাদীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে দেশের বিদ্যমান অরাজকতা পরিস্থিতির কারণে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এজাহার দিতে দেরি হয়।