সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা
প্রথম নিউজ, ঢাকা: রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সমন্বয়ে বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। ঢাকার এই তারুণ্য সমাবেশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশেপাশের এলাকার লোকারণ্য হয়ে গেছে।
আজকের তারুণ্য সমাবেশে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠাসহ ১১ দফা দাবিতে রাজধানীর এই সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হচ্ছে তারুণ্যের সমাবেশ’। একই দাবিতে এরই মধ্যে পাঁচটি সমাবেশ করা হয়েছে। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজকের শেষ সমাবেশে নতুন প্রজন্মের ভোটারদের ভোটাধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং স্বৈরাচারকে রুখে দেওয়ার আহ্বান জানানো হবে।
ঢাকায় আজ অনুষ্ঠেয় তারুণ্যের সমাবেশ সফলে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে আয়োজক সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। ঢাকা, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগের সমন্বয়ে এ সমাবেশ হবে। এটি সফলের লক্ষ্যে গতকাল রাজধানীসহ ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর নয়াপল্টন, কাকরাইলে লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপি। সমাবেশে অংশ নিতে এরই মধ্যে ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর নেতাকর্মী ও পেশাজীবীরা প্রস্তুতি নিয়েছেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সরজমিনে দেখা গেছে, দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও গতকাল শুক্রবার রাত থেকে ঢাকার আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছে। আজ ভোর থেকেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবোশ করছে।
নতুন ভোটার আর তরুণদের কাছে টানতে জুন মাসের প্রথমদিকে বিএনপি ‘তারুণ্য সমাবেশে’র ঘোষণা দেয়। দলটির অঙ্গ সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সমন্বয়ে এই সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে দলটির নীতি নির্ধারণী ফোরাম। সংগঠন তিনটির পক্ষ থেকে পরে দিনক্ষণ ও তারিখ ঘোষণা করা হয়। ওই ঘোষণা অনুযায়ী ১৪ জুন চট্টগ্রাম, ১৯ জুন বগুড়া, ২৪ জুন বরিশাল, ৯ জুলাই সিলেট ও ১৭ জুলাই খুলনায় তারুণ্যের সমাবেশ করেছে।
বিএনপির একাধিক নেতা জানান, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার টানা প্রায় ১৫ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে। ক্ষমতাসীনরা দেশের বিভিন্ন খাতে তাদের দর্শন প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক ‘পরিবর্তন ও দলীয়করণ’ করেছে। তারা মনে করে, দেশের মহান স্বাধীনতা-সংগ্রাম তথা মুক্তিযুদ্ধে শুধু আওয়ামী লীগেরই অবদান ছিল। অথচ আরও যাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল, তাদের উপেক্ষা ও অবহেলিত করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ‘ইতিহাস বিকৃতি’ ঘটানো হয়েছে। গত প্রায় ১৫ বছরে দেশের প্রায় পৌনে ৫ কোটি নতুন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। ক্ষমতাসীনদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করতে পারেনি। রাজপথে হামলা-মামলার শিকার হয়েছে অনেকেই। এ সরকারের বিরুদ্ধে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের
পাশাপাশি তরুণ সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে। তাই তরুণদের মাঝে দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেম তৈরির লক্ষ্যেই এসব সমাবেশ হচ্ছে।
এই সমাবেশে বিএনপির নতুন কর্মসূচি আসবে বলেও জানা গেছে। দলটি ফের শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানা গেছে। সেক্ষেত্রে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ সমাবেশের কথা ভাবছে বিএনপি। দলটি আরো কিছুদিন গতানুগতিক কর্মসূচি দিয়ে ধীরে চালো নীতিতে এগোতে চায়।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এবার বিএনপি ঢাকাকে টার্গেট করেই এগোচ্ছে। তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে ঢাকা ঘেরাও বা অবরোধ করার প্রস্ততিও রয়েছে দলটির। ঢাকার বাইরে নেতাকর্মীদেরও রাজধানীতে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করা লাগতে পারে বলে দলটি এরই মধ্যে বার্তা দিয়েছে।