সরকারের এজেন্সির নীল নকশারই একটা অংশ কুমিল্লার ঘটনা: রিজভী

প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে দেশে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে

সরকারের এজেন্সির নীল নকশারই একটা অংশ কুমিল্লার ঘটনা: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী

প্রথম নিউজ, ঢাকা:  পবিত্র ইসলাম ধর্ম নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের সম্প্রতি দেয়া বক্তব্যে দেশে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
 আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের বক্তব্যের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করেছেন বিশ্ববেহায়া এরশাদ। এরশাদ কার লোক? বিশ্ববেহায়া এরশাদ তো শেখ হাসিনার সার্টিফাইড বন্ধু। সরকারের অপকর্ম ঢাকার জন্য আগে বেফাঁস কথা-বার্তার প্রতিযোগীতা ছিল ওবায়দুল কাদের এবং হাসান মাহমুদের মধ্যে। তাদেরকে এখন টপকাতে চাঁন এই ‘অবৈধ’ তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান।

রিজভী বলেন, ‘ইসলাম ধর্ম নিয়ে মুরাদ হাসানের বক্তব্যের পরে ঘটনা ঘটলো কুমিল্লায়, এরপরে সারাদেশে টেনশন, উত্তেজনা ও রক্তপাত। গতকাল চৌমুহনীতে উত্তেজনা বিরাজ করেছে। আজ ১৪৪ ধারা জারি করেছে। কেন এই পরিস্থিতি? ওই যে মুরাদ হাসান যে বক্তব্য রেখেছে তারপরেই এই ঘটনা। এগুলো কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই সরকার তার সকল অপকর্ম, সকল জনবিরোধী কর্ম, রক্তপাত গুম-খুন সবকিছু আড়াল করার জন্য এবং দ্রব্যমূল্য যে বাড়তি সেগুলো আড়াল করার জন্য। সরকারের এজেন্সির যে নীল নকশা সেই নীল নকশারই একটা অংশ কুমিল্লার ঘটনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, আপনি নাকি দেশের জনগণকে নিরাপত্তা দেন। তাহলে আজ কেন এই দেশের জনগোষ্ঠীর কোন নিরাপত্তা নাই?

তিনি বলে, ‘এদেশের কোন মুসলমান হিন্দু এই ঘটনা ঘটাবে, এটা আমার বিশ্বাস হয় না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনের দেশ বাংলাদেশ। সেখানে আপনার আমলেই রামু, উখিয়া, টাঙ্গাইল ও পাবনায় হিন্দুদের উপর আক্রমণ হয়েছে এবং তাদের সম্পত্তি লুট করা হয়েছে। বিএনপি ৯১ ও ২০০১ সালে ক্ষমতায় ছিল। তখন তো কোন সংখ্যালঘু হিন্দু মন্দিরে হামলা হয় নাই। তাদের ধনসম্পত্তিও লুটপাট হয় নাই।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘চরম দুর্দিনের দিকে দেশকে ঠেলে দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। নিজের অবৈধ সত্তাকে টিকিয়ে রাখার জন্য। আর প্রভুদের খুশি রাখার জন্য। আর প্রভুদের দেখাচ্ছেন আমি ছাড়া এসবের মোকাবেলা কেউ করতে কেউ পারবে না।’

রিজভী বলেন, ‘আজ বিশ্ব খাদ্য দিবস। উনি (প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। যদি খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় তাহলে প্রতিবছর ১৯৪০ লক্ষ টন খাদ্য কেন আমদানি করতে হয়? ৪৭ লক্ষ টন খাদ্য বিনষ্ট হয়। কারণ লুটপাটের সরকার তাদের লোক দিয়ে জিনিসপত্র দাম বাড়ান। আর খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এই অবদান জিয়াউর রহমানের বেগম খালেদা জিয়ার। তাই তিনি চেষ্টা করছেন কি করে জিয়াউর রহমান বেগম খালেদা জিয়ার সমকক্ষ হওয়া যায়।মানুষ খাদ্যের অভাবে নিজের সন্তানকে বিক্রি করছে এমন একটা পরিস্থিতি দেশে। আর আপনি বলছেন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আজ খাদ্য দিবসে এরকম টাটকা মিথ্যা কথা এই প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোভা পায়।‘

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা একটা অরাজকতা ঘোর অন্ধকার দুর্ভিক্ষের মধ্যে বসবাস করছি। এ ধরনের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে একমাত্র জাতীয়তাবাদী শক্তিকে মোকাবেলা করতে হবে। যিনি এই মাটি মানুষের সাথে মিশে আছেন তাকে তো ধবংস করা যায়নি। পারেনি তাদের আন্দোলনের ফসল মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন এবং হাসিনা পারেনি তাই মিথ্যা মামলা দিয়ে চিকিৎসা না দিয়ে বন্দী করে রেখে নানা ধরনের নির্যাতন করে যাচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে।’

বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থ্যতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আজও সংবাদপত্রের দেখলাম তার জ্বর কমে নি এবং মুখে রুচি নাই। তার ইচ্ছামত তিনি চিকিৎসা নিতে পারেন না। কিন্তু শেখ হাসিনা যখন কারাগারে ছিলেন তার ইচ্ছামত তিনি স্কয়ারের চিকিৎসা নিয়েছেন। এই সরকার শুধু নিষ্ঠুর সরকার নয় একটা নেকড়ে সরকার। রক্তের জন্য সবসময় উন্মাদ হয়ে থাকে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom